ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিভাগের যৌক্তিকতায় এগিয়ে নোয়াখালী

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

নোয়াখালী, বাংলাদেশের একটি প্রাচীনতম জনপদ। তিন হাজার বছর পূর্বে পৃথিবীর মানচিত্রে এ জনপদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। আর তখন থেকেই এ অঞ্চলে মানব বসতি গড়ে উঠে। কালের পরিক্রমায় নোয়াখালী আজ স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী অঞ্চলে পরিণত।
ব্রিটিশ বাংলা, পাক বাংলা আর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিটি শাসনামলে নোয়াখালীর অবদান সর্বাগ্রে ছিল। প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নোয়াখালীর সন্তানদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ৫২ এর ভাষা সংগ্রামে শহীদ সালাম, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, ৭ বীরশ্রেষ্ঠের একজন এই নোয়াখালীর সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মহাকবি আব্দুল হাকিম, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত কবর নাটকের মুনীর চৌধুরী, নাট্যকার সেলিম আলদীন, জহির রায়হান, শহিদুল্লাহ কায়সার, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, ২৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সহ হাজারো কৃতি সন্তানের জন্ম দিয়েছে এ নোয়াখালী।
রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নোয়াখালীর সূর্য সন্তানরা কোন অংশে পিছিয়ে নেই। স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রথম স্পীকার আব্দুল মালেক উকিল, স্পীকার মোহাম্মদ উল্লাহ, আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মালেক উকিল, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দেশের প্রথম নারী স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের জন্মভূমি এই নোয়াখালী।
অর্থনীতি আর বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে একক জেলা হিসেবে সর্বাধিক অংশগ্রহণ নোয়াখালীর শিল্পপতিদের। দেশের অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে নোয়াখালীর শিল্পপতিদের অবদান অন্য জেলার চেয়ে এগিয়ে আছে। অথচ সরকার সেটা বেমালুম ভুলে যাচ্ছে। ব্যাংক বীমা সহ অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া মালিক, টিভি চ্যানেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই নোয়াখালীর হাতের ছোঁয়া বিদ্যমান।

নোয়াখালী আর কুমিল্লা, একটি তুলনামূলক অবস্থান:

অবিভক্ত ভারতবর্ষে নোয়াখালী জেলার মর্যাদা পায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক এদেশে জেলা প্রশাসন প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় থেকেই। ১৭৭২ সালে কোম্পানির গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস এদেশে প্রথম আধুনিক জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রচেষ্টা নেন। তিনি সমগ্র বাংলাদেশকে ১৯টি জেলায় বিভক্ত করে প্রতি জেলায় একজন করে কালেক্টর নিয়োগ করেন। ১৯টি জেলার একটি ছিল কলিন্দা।

জেলাটি গঠিত হয়েছিল মূলত:

নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে। কিন্তু ১৭৭৩ সালে জেলা প্রথা প্রত্যাহার করা হয় এবং প্রদেশ প্রথা প্রবর্তন করে জেলাগুলোকে করা হয় প্রদেশের অধীনস্থ অফিস। ১৭৮৭ সালে পুনরায় জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় এবং সমগ্র বাংলাদেশকে ১৪টি জেলায় ভাগ করা হয়। এ ১৪ টির মধ্যেও ভুলুয়া নামে নোয়াখালী অঞ্চলে একটি জেলা ছিল। 
পরে ১৭৯২ সালে ত্রিপুরা নামে একটি নতুন জেলা সৃষ্টি করে ভুলুয়াকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তৎকালে শাহবাজপুর, হাতিয়া, নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ড, লক্ষ্মীপুর ,ফেনী , ত্রিপুরার কিছু অংশ, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও মীরসরাই নিয়ে ছিল ভুলুয়া পরগনা। ১৮২১ সালে ভুলুয়া নামে স্বতন্ত্র জেলা প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত এ অঞ্চল ত্রিপুরা জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬৮ সালে ভুলুয়া জেলাকে নোয়াখালী জেলা নামকরণ করা হয়।
নোয়াখালীর ইতিহাসের অন্যতম ঘটনা ১৮৩০ সালে নোয়াখালীর জনগণের জিহাদ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ১৯২০ সালের খিলাফত আন্দোলন। জাতিগত সংঘাত ও দাঙ্গার পর ১৯৪৬ সালে মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালী জেলা ভ্রমণ করেন।
নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী মহকুমা নিয়ে নোয়াখালী জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি বিশাল জেলা হিসেবে পরিচালনা হয়ে আসছিল। ১৯৮৪ সালে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হলে লক্ষ্মীপুর ও ফেনী জেলা আলাদা হয়ে যায়। শুধু নোয়াখালী মহকুমা নিয়ে নোয়াখালী জেলা পুনর্গঠিত হয়।
অন্যদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের একটি অংশ কালের পরিক্রমায় ১৯৬০ সালে কুমিল্লা নামে একটি জেলা হওয়ার মর্যাদা লাভ করে…। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লার দু’টি মহকুমা চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পৃথক জেলা হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়। জাতিগত ঐক্য, ইতিহাস, ঐতিহ্যে নোয়াখালী ছিল সর্বত্র।  বিভাগ হওয়ার উপযুক্ততা কুমিল্লার চেয়ে এগিয়ে নোয়াখালী।।