ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রদীপ কি ‘আলাদীনের প্রদীপ’ পেয়েছিলেন?

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২০  

পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচিত হচ্ছেন টেকনাফ থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউপির উত্তর কুঞ্জুরী গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ কুমাদ দাশ ১৯৯৬ সালে এসআই হিসেবে যোগ দেন পুলিশে। কয়েক বছরের মধ্যেই পদোন্নতি পেয়ে হয়ে যান পরিদর্শক। এরপর আর ওসি পদ বাগিয়ে নিতে সময় লাগেনি তার।

জানা গেছে, ওসি হয়ে ঘুরেফিরে শুধু সিএমপি আর কক্সবাজারের থানাগুলোতেই পোস্টিং নিতেন প্রদীপ কুমার দাশ। চাকরি জীবনের ২৪ বছরে যেমন আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন, তেমনি নামে-বেনামে গড়েছেন অঢেল সম্পদও। এছাড়া বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি অনুসন্ধানে উঠে আসে ‘আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ’ পাওয়ার মতো এমনই চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। জানা গেছে, চাকরিতে যোগদানের মাত্র আট বছরেই চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় স্ত্রী চুমকি দাশের নামে চার শতক জমি কিনে ‘লক্ষীকুঞ্জ’ নামে একটি বিশাল বাড়ি নির্মাণ করেছেন প্রদীপ কুমার দাশ। এছাড়া মুরাদপুরে রয়েছে তার শত কোটি টাকার জমি। যা তিনি বোনের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে করে লিখিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

 

দুদক জানিয়েছে- নগরীর লালখান বাজারে একটি ফ্ল্যাট, কক্সবাজারে দুটি হোটেলের মালিকানা ও বেয়ালখালীতে স্ত্রীর নামে কয়েক কোটি টাকার সম্পদের পাশাপাশি মৎস্য খামার, ভারতের আগরতলা ও অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি আছে প্রদীপ কুমার দাশের। তার স্ত্রী চুমকি দাশ পেশায় গৃহিণী হলেও দুদকে জমা দেয়া বিবরণীতে তাকে মৎস্য খামারি হিসেবে দেখানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়- ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে মৎস্য খামার শুরু করেন চুমকি। যা থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করে কিনেছেন জমি, গাড়ি-বাড়ি।

সেই বিবরণীতে চুমকির স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগরীর পাথরঘাটায় ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা মূল্যের চার শতক জমি ও জমিটিতে গড়ে তোলা এক কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ছয়তলা ভবন, পাঁচলাইশে এক কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের ছয় গণ্ডা এক কড়া এক দন্ত জমি এবং কক্সবাজারে ঝিলংজা মৌজায় ১২ লাখ ৩২ হাজার টাকা মূল্যের ৭৪০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট।

অর্থ্যাৎ, সব মিলিয়ে তার স্থাবর সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয়েছে তিন কোটি ৫৯ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ টাকা। এছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের একটি মাইক্রোবাস এবং ব্যাংক একাউন্টে ৪৫ হাজার ২০০ টাকা দেখানো হয়েছে।

এর আগে, প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠায় ২০১৮ সালের জুন মাসে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে অস্বাভাবিক সম্পদের তথ্যও পান দুদক কর্মকর্তারা। এরপর সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হলে একই বছরের মে মাসে দুদকে বিবরণী জমা দেন তারা। একই বছরের নভেম্বরে চট্টগ্রাম থেকে তাদের সম্পদের বিষয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। তবে বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে প্রদীপ কুমার দাশ প্রত্যাহার হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে পুনরায় অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ খান।

এ ঘটনায় বুধবার কক্সবাজারে টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে ওসি প্রদীপ ও মো. লিয়াকতসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানার ওসিকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে রুজু এবং র‍্যাব-১৫ কে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

আদালত সূত্র জানায়, আদালতের আদেশ মতে মামলাটি বুধবার রাতেই টেকনাফ মডেল থানায় নিয়মিত একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- এসআই নন্দলাল রক্ষিত, এসআই টুটুল, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা। এ মামলায় নিহত সিনহা রাশেদ খানের সঙ্গী সাহেদুল ইসলাম সিফাতসহ ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার আদালতে র‍্যাবের করা রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে তিনজনকে সাতদিন করে রিমান্ড দেন আদালত। বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। পরে এ আদেশ পরিবর্তন করে আদালত। এ সময় বাকি দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। রোববার সাত আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র‍্যাব।