ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রত্যেককে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মানতে হবে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২০  

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের প্রতিটি অর্জন রক্তের বিনিময়ে পেতে হয়েছে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা হয়েছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। এরপর আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম তাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছিলাম। কিন্তু করোনা ভাইরাস এসে সবার জীবনযাত্রা স্থবির করে দিয়েছে।

এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সমস্যা। আশা করি দেশের প্রতিটি মানুষ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ম মেনে চলবেন। ইনশাআল্লাহ, এখান থেকে আমরা মুক্তি পাব।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় অনলাইনে আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এ ছাড়াও ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬-দফা আন্দোলনের জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল, সে কর্মসূচি সফল করতে গিয়ে সে সময় পাকিস্তানি শাসকদের হাতে শ্রমিকনেতা মনু মিয়া, আবুল হোসেন, শফিক সামছুলসহ যারা জীবন দিয়েছিলেন, আমি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

৬-দফা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এর একটা পটভূমি আছে। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধের সময় দেখা গেল আমার পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এই প্রদেশকে রক্ষা করার কোনো ব্যবস্থা তখন পাকিস্তানি শাসকরা নেয়নি- যেন ভারতের দয়ার ওপর আমরা পড়ে ছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, এই যুদ্ধের পর একটি গোলটেবিল বৈঠক ডাকা হয় লাহোরে। সর্বদলীয় বিরোধী দল এই বৈঠক ডাকে। সেখানে জাতির পিতা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেখানে যান। সেখানে তিনি এই ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। যে দাবির মূল বক্তব্য ছিল- প্রদেশ হিসেবে এই দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করা ও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা। সেই সাথে বাঙালির অস্তিত্বের যে দাবি তা তোলা হয়Ñ তা তুলে ধরার সময় অনেকে বাধা দেন। দুঃখের বিষয় হলো- বাংলাদেশের অন্য দলের দু-এক নেতাও বাধা দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় ফিরেও বঙ্গবন্ধু সংক্ষিপ্ত পরিসরে এ দাবি তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে ৬-দফা গ্রহণ করা হয়। আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনেও এই ৬-দফা গ্রহণ করে। ৬-দফা দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু সারাদেশে এটা প্রচার করার উদ্যোগ নেন। মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে ৩২ মিটিং তিনি (বঙ্গবন্ধু) করেছিলেন সারাদেশে। কিন্তু এর মধ্যে তিনি যখন যেখানেই যেতেন, সেখানেই তাকে গ্রেপ্তার করা হতো। এভাবে আটবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে জনসভা করে ঢাকায় ফিসে আসেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আর জামিন দেওয়া হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুই নয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে তখন আন্দোলন শুরু হয়। ১৩ মে প্রতিবাদ সভা হয়। এরপর ১৬, ১৭, ১৮ প্রতিদিনই প্রতিবাদ চলতে থাকে। ৬-দফা দাবিটা জনগণ লুফে নিয়েছিল। এটা তারা নিয়েছিল বাঁচার অধিকার হিসেবে এবং মূলত তাই-ই ছিল। এ দেশের মানুষ ৬-দফাকে শুধু দ্রুত সমর্থনই করেনি, স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে তারা নিজেদের দাবি হিসেবে নিয়েছিল। ৬-দফা বাংলার মানুষের মুক্তির দাবি হিসেবে সবার সামনে উদ্ভাসিত হয়েছিল।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান সরকার বসে ছিল না। নানাভাবে নির্বাচন ও চক্রান্ত করতে থাকে। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্তদের একের পর এক গ্রেপ্তার করতে থাকে। কিছু দালাল ছাড়া সাধারণ মানুষ আরও বেশি সচেতন, সুসংগঠিত হতে থাকে। ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকা কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। মামলাটি রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব। মামলার মূল অভিযোগ ছিল যে, আসামিরা সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই মামলার বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ আবারও প্রতিবাদে ফেটে পড়ল। সেই সময় গণ-অভ্যুত্থান হলো, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করল। সংগ্রামের ফলে আইয়ুব খান একপর্যায়ে বাধ্য হলেন এই মামলা প্রত্যাহার করতে। ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন। ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই ৬-দফার ভিত্তিতেই সত্তরের নির্বাচন। যে নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কাজেই ৬-দফা ও ৭ জুন আমাদের স্বাধীনতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের আর্থসামাজিক ও প্রশাসনিক এবং সামগ্রিক বৈষম্য ও বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ জুনের আন্দোলনের ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী তার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কথাও স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি অর্জন রক্তের বিনিময়ে পেতে হয়েছে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না, বৃথা যেতে পারে না; যায়ওনি। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা হয়েছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। এরপর আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম তাতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছিলাম। কিন্তু করোনা ভাইরাস এসে আজকে সবার জীবনযাত্রা স্থবির করে দিয়েছে। আশা করি- আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ম চলবেন। ইনশাআল্লাহ এখান থেকে আমরা মুক্তি পাব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।