ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

নোয়াখালীর নলদিয়া মেলা বিলুপ্তির পথে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৯  

প্রতি বছর বৃহত্তর নোয়াখালীর ফেনী-নোয়াখালী মিলনাস্থলে দাগনভূঞা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামে যে মেলা হতো। তা বিলুপ্তি পথে। একসময় প্রতিদিন লাখ লাখ লোকের সমাগম হত যে মেলায় সেটা এখন অস্তিত্ব সংকটে। জৌলুস হারিয়েছে যে মাজারকে কেন্দ্র করে এই মেলা বসত সেই নলদিয়া দরগাহেরও।

ইতিহাস থেকে জানা যায়,অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে আধ্যাত্মিক পুরুষ ওলিয়ে কামেল হাফেজ দেওয়ান ফকির আবদুর রশিদ (রহ.) ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আগমন করেন। পরবর্তীতে তিনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করা শুরু করেন এবং তার দীক্ষায় বহু মানুষ সেখানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কালক্রমে তিনি ইন্তেকাল করলে তার ভক্ত মুরিদানরা বিগত ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবারের মত বার্ষিক ওরস মাহফিলের আয়োজন করে। ওরশ মাহফিলকে ঘিরে সেখানে দোকান পাট বসতে থাকে এবং দু’তিন বছরের মাথায় সেটি মেলায় রূপান্তরিত হয়। শুরুতে ওরসকে ঘিরে দোকান পাট ও মেলার উৎপত্তি ঘটলেও বর্তমানে ওরস আয়োজন নেই।

ফেনী ও নোয়াখালী জেলার মিলনস্থল দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুরে এ মেলা বছরের ১ মাঘ থেকে ১০-১৫ দিন ব্যাপী এ মেলার আয়োজন হয়তো।তবে মেলাটি ১ মাসের মতো থাকতো। এসময় এ মেলায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটতো। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলা গত কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন কারনে বন্ধ হয়ে গেছে।

অঞ্চলের সর্বত্রই বিরাজমান উচ্ছ্বাস-হৈ হুল্লোড় আর অজানা আনন্দে ঘিরে থাকতো শিহরণ। একটা সময় ছিলো; যখন এ অঞ্চলের মানুষ এ নলদিয়া মেলাকে ঘিরেই সাজাতো তাদের নানারকম পরিকল্পনা; ছিলো আলাদা ‘বাজেট’ও!

জনশ্রুতি আছে- ‘শিশুর দোলনা থেকে শুরু করে মৃতের পালঙ্ক; সব কিছুই মেলে নলদিয়া মেলায়।’ দূর দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নিয়ে আসতেন তাদের পণ্য। সেসব পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতেন মেলায়।

শ্রেণি-পেশার মানুষের আনাগোনা; মেলার হরেক রকম আয়োজন- সব কিছু মিলিয়ে মাঘ এর প্রথম থেকে সাজ সাজ রব বিরাজমান ছিলো সমতটের জনপদ এ নোয়াখালী-ফেনী জেলার মিলনাস্থল। আর স্থানীয় বাসিন্দারা দিন গুণতেন- কবে আসবে মাঘ; ঘিরে বসবে মেলা, হবে আনন্দ উচ্ছ্বাস আর হুল্লোড়। যদিও প্রতি মাঘ মাসের ১ তারিখ মেলা শুরু হয়- কিন্তু পরিবেশ উল্লাসমুখর হয়ে উঠে তারও আগে থেকে।

ফেনী-নোয়াখালীর বিখ্যাত হোটেলগুলো এসে এ মেলাকে যেমন আলোকিত করতো তেমনি যাত্রা, সার্কেস, নাগরদোলা, শিশুদের পুতুল নাচ, খেলনা দোকান, সাগরের বড় বড় মাছ এবং ঐতিহাসিক কাঠের ফার্ণিচার এ মেলার প্রধান বাণিজ্য ছিল।

সরকারী দস্তাবেজ অনুসারে ১৯২৩ সালে এই মেলার কথা উঠে আসলেও বয়স্ক লোকেরা বলেন তারা তাদের বাপ দাদার কাছেও এই মেলার কথা শুনেছেন। এই মেলায় পাওয়া যেতনা এমনকোনো পন্য নেই। আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনের অংশ এই মেলা। মেলার সময় বউরা বাপের বাড়ী থেকে স্বামীর বাড়ী চলে আসে। আর এলাকার ঝিয়েরা চলে আসে বাপের বাড়ীতে। জামাই বেড়াতে যায় মেলা থেকে বড়ো মাছটি নিয়ে শ্বশুরবাড়ী আর মেয়েজামাইবাড়ীতে মেলার ফল মিষ্টি পাঠানো ছিলো এলাকার রেওয়াজ।

বিগত কয়েক বছর ধরে কাঠের ফার্নিচার ক্রয় বিক্রয়ের জন্য এই মেলা দেশব্যাপী প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলো।

স্থানীয়দের মতে,২০১৪ সালে জেলা প্রশাসক পক্ষ থেকে অনুমতি না থাকায় মেলা হয়নি। প্রতি বছর মেলাকে ঘিরে দুটি গ্রুপে সক্রিয় থাকতো। একটি মেলার ভূমি মালিকানাধীন গ্রুফ, অন্যটি বহিরাগত। আইন শৃঙ্খলা অবনতি, মদ জুয়ার আসর এবং অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন থাকায় এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধ ও সংঘাতের আশংকায় মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।তার পর থেকে বিগত কয়েক বছর মেলা বন্ধ রয়েছে।