ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

নোবিপ্রবির জেনির জিনিয়াস হওয়ার গল্প

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই হয়তো মানুষ প্রতিনিয়ত আপন মনে স্বপ্ন বুঁনে যায়। নিজের দেখা স্বপ্ন নিয়ে ছুঁতে চায় আকাশ। বাস্তবে জয় করতে চায় স্বপ্নকে। প্রতিনিয়ত বুনে চলা স্বপ্নে কারও ইচ্ছে ডাক্তার হওয়া, কারও ইঞ্জিনিয়ার। আবার কারও কারও শিক্ষক হওয়া। তেমনই এক স্বপ্নজয়ী ফাতেমা আক্তার। তবে জেনি নামেই বেশি পরিচিত তিনি।

জেনি ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অন্য আট দশজনের মতোই চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। জেনির বাড়ি ফেনী সদর উপজেলায়। বাবা মো. ফারুক ভূঁইয়া পেশায় একজন ঠিকাদার এবং মা সেলিনা আক্তার গৃহিণী। চার ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় জেনি।

‘স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না’ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের বিখ্যাত সেই উক্তির মতোই ছিল জেনির জীবনের স্বপ্ন কিংবা স্বপ্নের জীবন।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় এবং স্নাতকত্তোরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে বর্তমানে একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন ফাতেমা আক্তার জেনি।

সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় ফাতেমা আক্তার জেনির। শুরুতেই জীবনের শৈশব ও কৈশোর ছলছল চোখে আনমনা হয়ে স্মৃতির ভেলায় ভেসে কুড়িয়ে বললেন, ছোটবেলায় টেলিভিশনে অনেক বেশি নাটক ও কার্টুন দেখতাম। অনেক বেশি জেদিও ছিলাম। বাবার কাছ থেকে অনেক কিছু চাইতাম। যা চাইতাম তা না দিলে কোনোভাবেই শান্ত হতাম না। বলা শেষ হতে না হতেই কি যেন ভেবে উঠলেন।

পড়াশোনায় যার এত এত সফলতা তাতো জানতেই হবে। মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে নানান প্রতিবন্ধকতা আমাদের সমাজে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এর মাঝেও কীভাবে আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছেন? এর উত্তরে জেনি জানালেন, কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল না পরিবার থেকে। যেকোনো প্রয়োজনে বাবা সর্বদা এগিয়ে আসতেন। এটা সত্য যে মেয়ে বলে অনেকে খুব ভালো ফলাফল করলেও পরিবার থেকে যতটা পাওয়ার কথা ছিল, ততটা সাড়া পায় না। বরং আমি তার চেয়ে হাজারগুন বেশি পেয়েছি।


শিক্ষকতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিলেন কবে থেকে? চোখের চাহনিতেই যেন উত্তর খুঁজে পাওয়া গেল। বললেন, ছোটবেলা থেকে শিক্ষক হওয়ার প্রচণ্ড ইচ্ছে ছিল। তবে সেটা কেবল স্কুল বা কলেজের শিক্ষকতার স্বপ্ন ছিল। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বেশকিছু ভালো শিক্ষককে দেখে আরও বেড়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়াটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া বলে আমি মনে করি। বিধাতা দুহাতে দিয়েছেন বলেই হয়তো আমার চাওয়ার চেয়ে পাওয়াটা বেশি হয়েছে।

এ পথে আসার অনুপ্রেরণার কথা জানাতে গিয়ে বললেন, প্রথমত আমি নিজেই নিজের প্রেরণা। এরপর আমার পরিবার বিশেষ করে বাবা এবং আমার শিক্ষকদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে বিশেষ করে মাসুম স্যার এবং মাসুদ স্যার ছিলেন সবচেয়ে অনুসরণীয়। প্রথম সেমিস্টারে যখন ৩.৮০ পেলাম তখন মাসুদ স্যার আমাকে শিক্ষক হওয়ার জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানালেন জেনি। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন ভালো এবং আদর্শ শিক্ষক হিসেবে দেখতে চান তিনি। তার দ্বারা যেন কারও ক্ষতি না হয়, সেটাই চান জেনি। এ ফাঁকে জানালেন আরেকটা ইচ্ছের কথা।

বিসিএসে এডমিন ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছে আছে তার। তবে তা নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য। পাশাপাশি বিদেশে গিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি নেয়ার ইচ্ছের কথাও বললেন জেনি।

ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতা পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য কোনো পরামর্শ আছে কী, জানতে চাইলে তিনি বললেন, শিক্ষকতা পেশা সত্যিই একটি মহান পেশা। পেশার চেয়ে নেশাই বেশি কাজ করে এখানে। শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। তাই তার নৈতিকতা হবে সর্বোত্তম। শিক্ষক হবেন স্বার্থহীন, লোভহীন এবং সৎ ব্যক্তি। ছাত্র/ছাত্রীদের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করার নামই শিক্ষকতা। যে বা যারা এসব মেনে নিতে পারবেন, তারাই এ মহান পেশাকে আপন করতে পারবেন।

নিজের স্বপ্ন পূরণের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম দিন থেকেই ঠিক করতে হবে আসলে আমি কী করতে চাই। কারিকুলাম-ভিত্তিক পড়ালেখার পাশাপাশি বাইরের জগত সম্পর্কে জানতে হবে। বিভিন্ন রকম এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিসের সঙ্গে জড়িত হতে হবে। তবে পড়াশোনাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।