ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

পৃথিবীর ১২৬টি দেশে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ অর্থাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। এ দেশগুলোর প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ এ ঝুঁকিতে রয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে এক অ্যাডভোকেসি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সমাজের সবস্তরের মানুষকে অবহিতকরণের মাধ্যমে এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভার শুরুতে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, বংশবিস্তার, রোগ-জীবাণু বহন, মানুষকে আক্রান্ত করাসহ বিশ্বে ডেঙ্গু রোগের সামগ্রিক চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) এর সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তৌহিদুল হক।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করার রেকর্ড থাকলেও গত আগস্টে ছিলো এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। সারাদেশে এ এক মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড করা হয়, যার অধিকাংশই ছিলো রাজধানী ঢাকায়। তবে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে- এ বছরও একই সময়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। একই সঙ্গে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম দেখানো হয়, যার মধ্যে এ রোগ প্রতিকারে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও এডিস মশার ওপর গবেষণা অন্যতম।

অ্যাডভোকেসি সভায় এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার। তিনি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির সামগ্রিক কার্যক্রম ও ২০২০ সালে চলমান এবং আসন্ন এডিস মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এ রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে আমরা গত বছর বিভিন্ন আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একাধিক অবহিতকরণ সভা, সচেতনতামূলক পদযাত্রা ও পথসভা, বাউল সঙ্গীত, জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি, সচেতনতামূলক বার্তা, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।


এছাড়া ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম দেশের জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশন মালিক এবং বার্তা প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, যা এবছরও চলমান থাকবে। 

লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সারওয়ার আরো বলেন, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভুতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একেকজন ‘অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে কাজ করতে পারে। 

‘গত বছর তারা নিজেরা নিজেদের বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রতিবেশীর বাসা-বাড়িও পরিদর্শন করে এডিস মশার প্রজননস্থল ধবংস করেছে। আমরা এবারও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই প্রত্যাশা করছি। এছাড়া মেয়রের নেতৃত্বে ডিএনসিসির সব বিভাগ ও ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে আমরা ‘চিরুনি অভিযান’ পরিচালনা করি।’

তিনি আরো বলেন, মসজিদের ইমামরা সমাজের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। মানুষ তাদের বয়ান শুনে, তাদের মান্য করে। গত বছরও ইমামরা প্রতি জুমার নামাজে তাদের বয়ানে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলচনা করেছেন, যা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিলো। আমরা আশা করবো, এবারও ইমামদেরকে আরো জোরালোভাবে আমাদের পাশে পাবো। 

তিনি বলেন, আমরা মশক নিধন কার্যক্রম আরো বেগবান করতে এরই মধ্যে ২০০টি ফগার মেশিন, ২৩৮টি পালস ফগমেশিন, ১৫০টি হার্টসন হস্তচালিত মেশিন, ৩৪০টি প্লাস্টিক হস্তচালিত মেশিন, ২টি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন, ১০টি মটরসাইকেল ফগার ও হস্তচালিত মেশিন, ২০টি মিস্ট ব্লোয়ার/পাওয়ার স্প্রে মেশিন ক্রয়পূর্বক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ভবিষ্যতে আরো কয়েকটি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন ক্রয় করার পরিকল্পনা আছে। বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১ হাজার বিঘা জলাশয়/ডোবা/পুকুর এর জলজ আগাছা ও কচুরিপানা পরিষ্কার করেছি, যা এখনো চলমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। আমরা খুঁজে বের করেছি কোথায় কোথায় এডিস মশা প্রজনন করে, কোথায় এদের ঘনত্ব বেশি, কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এসব তথ্য-উপাত্ত কাজে লাগিয়ে এবার বছরের শুরু থেকেই পুরোদমে কাজে নেমেছি। 

তিনি বলেন, ২০২০ সাল বিভিন্নভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এ বছরকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষ যাতে এডিস মশার উপদ্রব ছাড়াই বছরব্যাপী এ উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে সেজন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

ডিএনসিসির অঞ্চল ১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়নের সভাপতিত্বে এবং সিডিসির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির অঞ্চল ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন, অঞ্চল ৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস, অঞ্চল ৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সহসভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, উত্তরার বিভিন্ন কল্যাণ সমিতির নেতা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, উত্তরার বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও মসজিদের ইমামরা উপস্থিত ছিলেন।