ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তারের দূর্ব্যবহারের শিকার

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম ও টেষ্ট বানিজ্যের পর এবার প্রসূতী মা কে জরুরী চিকিৎসা (ডেলিভারী) না করে রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের (মাতৃমঙ্গল) মেডিকেল অফিসার ডা: হ্যাপী কর্মকারের বিরুদ্ধে। ২৪ ঘন্টার মাতৃত্ব সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও শুধুমাত্র ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আল্টাসনোগ্রাফী না করার অভিযোগে রোগীকে তাড়িয়ে দেন হাসপাতাল থেকে। সেবা না পেয়ে পরে ওই দিনই স্থানীয় একটি হাসপাতালে মা হন ওই রোগী। এর আগে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ভিজিটর ও ডাক্তারদের বিরুদ্ধে টেষ্ট বাণিজ্য ও রোগী হয়রানীর অভিযোগে বিভিন্ন পত্রিকায়  সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের রোজিনা নামে এক জরুরী প্রসূতী মায়ের ডেলিভারীর জন্য মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা: হ্যাপী কর্মকারের নিকট আসেন। কিন্তু তার (ডাঃ হ্যাপী কর্মকার) প্রেসক্রিপশন ছাড়া আল্টাসনোগ্রাফী টেষ্ট করায় রোগীকে সেবা না দিয়ে রোগীর স্বজনের সাথে দুর্ব্যবহার করে বের করে দেন। এমন একটি  অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে এসে পৌছেছে। অডিও রেকর্ডের কথোপকথন পাঠকের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।

রোগীর স্বজন: ম্যাডাম সমস্যা হয়েছে কি, ওর ডেট ওভার হয়ে গেছিল।
ডাক্তার: আল্ট্রা করাইতে কে বলছিল?

রোগীর স্বজন: আগে আল্ট্রা টা করাইছি যাতে রিপোর্টটা দেখাইতে সুবিধা হয়। ও তো ডাক্তার দেখায়নাই। শুধু আল্ট্রা টা করছে জনসেবাতে।

ডাক্তার: এখন অফিস বন্ধ, তুমি বাইরে যাও। আমি আজকে ওকে দেখবো না। এটা সম্ভব না। কেউ আল্ট্রা করে পাঠালো, সেটা আমি দেখবো। আমাকে তুমি ডিজঅনার করতেছো। আমি তো ডাক্তার।

রোগীর স্বজন: না না, ম্যাডাম সমস্যা হইছে কি আমি আপনাকে একটু আমার কথাটা শুনাই।

ডাক্তার: না না আমি তোমার কথা শুনবো না, আমি তোমার কথা শুনতে বাধ্য না। ও তো আমার রোগী না। ও রুনা আপার রোগী। রুনা আপার সাথে গিয়ে কথা বলো। কেনো তুমি এটা তো রুনা ম্যাডামকে দেখাইছিলা।

রোগীর স্বজন: এটা তো প্রাইভেটে আগে দেখাইছি।

ডাক্তার: এখন দেখাও গিয়ে! সমস্যা কি?

রোগীর স্বজন: আগে প্রাইভেটে দেখছে বলে আপনারা দেখবেন না?

ডাক্তার: দেখবো, কেনো তুমি অফিস টাইমে আসছো? টিকিট কাটছো? হাসপাতালে এসে? রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার নিছো? আমি লিখে দিছি আল্ট্রা টা? অযথা আল্ট্রা করে আসছো। তাহলে কেন দেখবো? তোমার বাসায় যদি তুমি আমাকে দাওয়াত না দাও, আমাকে যদি পারমিশন না দাও, আমি কি যাবো? তোমার বাসায়?

রোগীর স্বজন: না না আপনার কথা তো অবশ্যই শোনা... সমস্যা হচ্ছে ওকে আমি পাঠাইছি মাতৃমঙ্গলে আসার জন্য।

ডাক্তার : ও মাতৃমঙ্গলে আসছে, ও কি টিকেট নিছে? রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার দিছে? ও চেক আপ করছে? ও চেক আপ করার পর আমার রুমে আসছে? ও কে আমি দেখছি? যে ওর কি লাগবে? আল্ট্রা লাগবে না কি লাগবে? তুমি গিয়ে আল্ট্রা করে আসছো তাহলে তুমি ওদের গিয়ে দেখাও। ওরা ডাক্তারের ব্যবস্থা করে দিবে। আর এখন তো অফিস টাইম না। সব কিছুর একটা সিষ্ট্রেম আছে, লিগ্যালিটি আছে, লয়ালিটি আছে।

রোগীর মা: রাগ কইরেন না আপা রাগ কইরেন না। আমরা জানি না।

ডাক্তার: এই রিক্সা ডাকো তো (স্টাফকে)

রোগীর মা: আমরা ভুল কইরালাইছি।

ডাক্তার: যাও যাও, আমি তোমাদের জন্য বসে থাকিনাই। আমি আমার অফিসের কাজের জন্য বসে আছি। ...

ভূক্তভোগী রোজিনার স্বজন অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ আগস্ট সকালে ডেলিভারী ব্যাথা শুরু হলে রোজিনাকে লক্ষ্মীপুর মা ও শিশু কেন্দ্রে নিয়ে আসি। এর ১২ দিন পূর্বে ডেলিভারী তারিখ ছিল। কিন্তু ডেলিভারী তারিখ অতিক্রম হওয়ায় আসার সময় নিজ উদ্যোগেই একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফী টেষ্ট করিয়ে নিয়ে আনি। হাসপাতালে প্রায় ১ ঘন্টার বেশি সময় বসে থাকার পর ডাক্তার হ্যাপী কর্মকারের স্বাক্ষাৎ পেতে তার রুমে যাই। ডাক্তারকে রিপোর্ট ফাইল দেওয়ার সাথে সাথে উনি (ডাঃ হ্যাপী কর্মকার) ফাইলটি ছুঁড়ে ফেলে দেন। পরে আমাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেন। পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঘন্টাখানেক পরে বাচ্চা দুনিয়ায় আসে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা: হ্যাপী কর্মকার মুঠোফোনে বলেন, এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই। এটি সত্য নয়। এমন ঘটলে অভিযোগ করতে বলেন রোগীকে। তবে রোগী ও ফাইলপত্র নিয়ে সাংবাদিকদের অফিসে গিয়ে কথা বলতে বলেন তিনি।

জরুরী মাতৃত্ব সেবা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে ডেলিভারী ও জরুরী অপারেশন রোগীদের জন্য ২৪ ঘন্টা সেবা চালু থাকলেও এবং এসকল রোগীদের কোন আউটডোর টিকিট ব্যবস্থা না থাকলেও রোজিনাকে অফিস সময়, টিকিট ও টেষ্ট করাইছিলো কেন সে অজুহাতে চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার প্রসঙ্গে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা: আশফাকুর রহমান মামুন বলেন, বিষয়টি কারো কাম্য নয়। রোগীকে সেবা দেওয়া যেতো। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন।