ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষিতে বরাদ্দ ও ভর্তুকি- দুটোই বাড়ানো হয়েছে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০  

করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভাল নেই দেশের কৃষক ও কৃষি ব্যবস্থা। অন্য সেক্টরের মতো কৃষি খাতেও বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। করোনা পরবর্তীতে দেশের খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষিখাতে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আর তাই বাড়ানো হয়েছে কৃষি খাতের বাজেটও। বাজেটে কৃষি বরাদ্দের পাশাপাশি ভর্তুকিও বাড়িয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষকদের টিকেয়ে রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে দুই হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। বাজেটে কৃষি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কৃষি অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা। যে বরাদ্দ রয়েছে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন যেন হয় সেটি বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজেট বক্তৃতায় কৃষির ওপরও গুরুত্ব দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষি হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত। আমরা অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসনে জোর দেয়া ও সারের ওপর ভর্তুকি অব্যাহত রাখব।
২০২০-২১ অর্থবছরের অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষককে টিকিয়ে রাখতে কৃষি খাতের কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং পানি সম্পদ এই পাঁচটি খাতে ২৯ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ১৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে দুই হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়কে ১৫ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা বেশি। আর চলতি সংশোধিত বাজেটের চেয়ে দুই হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি খাতে ভর্তুকিও বেড়েছে ৫০০ কোটি টাকা। এবার কৃষি খাতে ভর্তুকি ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ভিত্তিক বাজেটে দেখা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়কে ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ১৪ হাজার ৪৯ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে কৃষি খাতে পূর্বের চেযে বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে কৃষিকে মানব সভ্যতার ‘শেকড়’ বলে অভিহিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর করোনাভাইরাসের অভিঘাত মোকাবেলায় কৃষিতেই ফিরতে চাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কৃষির কারণে সভ্যতা এগিয়েছে। আমরাও কৃষি সভ্যতার ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যেতে চাই। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবার পরই তাই গুরুত্ব পাবে কৃষি। সেটি আমাদের শেকড়। কৃষিকে এমনভাবে সাজাবো যেন কৃষির ওপর নির্ভর করে অর্থনীতিতে আলোকিত করতে পারি। আমাদের অর্জনকে আরও গভীর করতে পারি। এদিকে, কৃষকদের ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে ৫ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাব মোকাবেলায় বিগত বছরগুলোর মতো কৃষি খাতে ভর্তুকি, সার-বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ প্রণোদনা ও সহায়তা কার্ড, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা, স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তে বিশেষ কৃষি ঋণ সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া ফসল কর্তন কার্যক্রমে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি কেনায় কৃষককে ভর্তুকি দেয়া অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা দুই কোটি আট লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ জন। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামীতে কৃষি খামার যান্ত্রিকীকরণে ৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে কৃষি ভর্তুকি ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষি পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হবে। বিগত বছরের মতো আমদানি খরচ যাই হোক না কেন আগামী অর্থবছরেও রাসায়নিক সারের বিক্রয়মূল্য অপরিবর্তিত রাখা হবে ও কৃষি প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে।’ বক্তৃতায় বলা হয়, আগামী অর্থবছরে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং খাদ্য নিরাপত্তা খাতে ২২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ২১ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।
পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ভর্তুকিটা আরও একটু বাড়ানো দরকার ছিল। টাকা থাকলেও বাইরের খাবার পাওয়া যাবে না। প্রান্তিক কৃষি রক্ষায় এটি দরকার। ভর্তুকি যে পাওয়ার উপযুক্ত তারা যেন সময়মতো পায়। যারা পাওয়ার কথা না তারা যেন ভর্তুকি না পায়। এছাড়াও যান্ত্রীকীকরণে যেটা রয়েছে সেটা খুবই ভাল। আর যান্ত্রীকীকরণ খুবই দরকার। এবার বোরো মৌসুমে যন্ত্রের সুফল আমরা দেখেছি। যান্ত্রিকীকরণ গুরুত্ব দিতে হবে এছাড়াও ভর্তুকিতে যদি আরও বাড়ানো যায় সে কথা বলেন। একই সঙ্গে বাস্তবায়ন সঠিকভাবে হোক সেকথাও বলেন এই অর্থনীতিবিদ।
এ বিষয়ে সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেছেন, কৃষিতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, সেটি বেশ ইতিবাচক কিন্তু কোন খাতে যাবে সেটি সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। সামনের দিনে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হলে বিপণন ও বাণিজ্যিকীকরণে সহায়তা ও নীতিসহায়তা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেছেন, এবার কৃষি খাতে ভর্তুকি ৫০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। তবে সামনের দিনে সারের দাম কমার কারণে এ খাতে অর্থের ব্যবহার কম প্রয়োজন হতে পারে। তাই বাড়তি অর্থ ফেরত না দিয়ে কৃষককে সরাসরি প্রণোদনা কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। বিশেষ করে আমদানিনির্ভর তেল, ডাল, মসলাজাতীয় শস্য উৎপাদনে নগদ সহায়তা দিলে আমদানি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
কৃষিতে আরও গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুূল বারকাত  বলেন, কৃষিখাতে কোন বরাদ্দ বাড়েনি। কারণ হলো কয়েকটি টাকা বাড়ানো এটি বাড়ানো নয়। এর সঙ্গে ‘ইনফ্লেুশান এডজাস্ট’ করা হলে এটাকে বৃদ্ধি বলে না। আমরা আমাদের বাজেটে বলেছি, ৬৬ দিনের লকডাউনে সেবা খাত ৬৫ ভাগ, শিল্পখাত ৭৫ কৃষিখাত ৪৬ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষিখাতে সবচেয়ে কমক্ষতি তবুও ক্ষতি অনেক। আমি মনে করি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত কৃষিখাতে। বৈশি^ক অর্থনীতিতে যে বড় ধরনের টালমাটাল হয়ে যাচ্ছে সেখানে রফতানি করার কোন জিনিস পাবেন না, জায়গাও পাবেন না। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি বাঁচাতে হবে। যে পরিমাণ মানুষ গরিব হয়েছে তাতে সামনে বড় ধরনের খাদ্য সঙ্কট হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সুবর্ণজয়ন্তী সেখানে ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছে কোভিড ১৯ যা বৈশি^ক মহামারী যা কখন শেষ হবে কেউ জানে না। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল কৃষিখাতে যা দেয়া হয়নি বলে মনে করেন আবুল বারকাত।
এদিকে, বাজেট বক্তৃতায় করোনা-পরবর্তী বিশ্বে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের বিপুল জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কৃষি খাতে নিয়োজিত কৃষক, কৃষিশ্রমিক ও খাতসংশ্লিষ্টদের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষি উৎপাদন, বাজারজাত ও আমদানি নির্বিঘœ রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেবে সরকার। এজন্য দেশে এক ইঞ্চি আবাদি জমিও ফেলে না রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানান, স্বল্পমূল্যে সার-বীজ কেনা, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রকল্প এবং স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে কৃষিঋণ বিতরণে আগের উদ্যোগগুলো এগিয়ে নেবে সরকার। এছাড়া আগামী অর্থবছরে প্রায়োগিক গবেষণা জোরদার করার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিভিন্ন ফসলের বিশেষ জাত উদ্ভাবনে সহায়তা করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, মানসম্পন্ন পাটবীজ উৎপাদন ও বহুমুখী পাটপণ্যের উদ্ভাবনের গবেষণায় সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে। বাড়ানো হবে খাদ্য সংরক্ষণের জন্য গুদামের ধারণক্ষমতা। মাছ, মাংস, ডিম, দুধের মতো আমিষ পণ্য উৎপাদনে সাফল্য ধরে রাখতে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। বলা হয়েছে, মিঠা পানির মাছের নতুন জাত উদ্ভাবনের গবেষণায় ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সহায়তা দেবে সরকার। এ খাতের উন্নয়নে প্রস্তাবিত ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০’ এরই মধ্যে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে তিনটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন, তিনটি প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং বিভিন্ন বিষয়ে ৪০টি গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
করোনা মহামারীর সময় জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবারের বাজেটে। প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি বোরো মৌসুমে ৮ লাখ টন ধান ও ১১ লাখ ৫০ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এরই মধ্যে আমন মৌসুমে ৭ লাখ ৯৮ হাজার টন শস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্যসহায়তা প্রদান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালিয়ে নেয়া এবং খোলাবাজারে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদনকারীরা কিছুটা হলেও লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের মতো নিত্যপণ্যের স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় রোলার, বল, বেয়ারিং, এমএস শিট, গিয়ার বক্স, টায়ার, টিউব, হুইল প্রভৃতি আমদানিতে বিদ্যমান ৫-১০ শতাংশ শুল্কহার কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে আসন্ন অর্থবছরে দেশে কৃষিযন্ত্রের দাম অনেকটাই কমে আসবে। ট্রাক্টরের টায়ার ও টিউব আমদানিতে আগে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। এবারের বাজেটে এ হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সয়াবিন অয়েল কেক ও সয়াবিন পোটিন আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া হয়েছে। মূলত পোলট্রি, ডেইরি ও মৎস্য শিল্পে এ পণ্যগুলো ব্যবহার হয়।
জাতিসংঘ এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি) বলেছে, বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বড় আকারের দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে এবং এতে প্রায় তিন কোটি মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাতে পারে। তাই করোনা পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষিখাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। কৃষি খাতে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য সরকার আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকি, কৃষিপণ্য রফতানিতে শতকরা ২০ ভাগ নগদ প্রণোদনা, কৃষি সেচে বিদ্যুত ব্যবহারের ওপর শতকরা ২০ ভাগ রেয়াত, এবং কৃষকদের সর্বনিম্ন সুদে ঋণ প্রদান করা হবে। কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য প্রণোদনা দেয়া হবে তিন হাজার কোটি টাকা। এতে এবার কৃষি যন্ত্রপাতির দাম কমবে।