ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

কক্সবাজার সমুদ্রে দেখা গেল বিরল গোলাপি ডলফিন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যখন পর্যটকশূন্য তখনই দেখা মিললো বিরল গোলাপি ডলফিনের। সৈকতের কাছে সমুদ্রের নীল পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে ভেসে বেড়াচ্ছে ডলফিনের দল, খেলছে মনের আনন্দে। 
দুটি দলে প্রায় ২৫টার মত ডলফিন দেখা যায়। একটি দলে বড় আকারের একটি গোলাপি ডলফিনের দেখা যায়। 

২৩ মার্চ সৈকতের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্টের কাছে ডলফিনের দুটি দলকে খেলা করতে দেখেন স্থানীয়রা।

সৈকতের কাছেই ডলফিনের আনাগোনার বিষয়টি জানতে পেরে নিজের কায়াক নিয়ে সাগরে যান সৈকত লাগোয়া সায়মন বিচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব রহমান রুহেল।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কলাতলী পয়েন্টের কাছে ডলফিন দেখা গেছে বলে খবর পাই। শুনে আমি নিজের কায়াকটি নিয়ে সাগরে যাই। সেগুলোর কাছে যাওয়ার সময় দেখি তারা সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে চলে যাচ্ছে। সেখানে আগে থেকে ডলফিনের আরেকটি দল ছিল। অনুসরণ করে সেগুলোর কাছে গিয়ে দেখতে পাই দুটি দলে সেখানে মোট ২০-২৫টা ডলফিন আছে।

মাহবুব রহমান বলেন, কিছুক্ষণ তাদের অনুসরণ করার পর দেখি তারা আমার কাছে কাছেই ঘুরছে। ওই দলে একটি গোলাপি ডলফিনকে দেখেছি। সেটি ছিল আকারে সব থেকে বড়। মাথাটা পুরো গোলাপি, শরীরের বেশিরভাগ সাদা ও ধুসর রঙের।

প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় আমি সেখানে ছিলাম। সেগুলো আমার আশেপাশেই ছিল। এরমধ্যে গোলাপি ডলফিনটিও কাছাকাছি ছিল।

ওই দিন ডলফিনদের একটি ভিডিও ধারণ করেন মাহবুবুর রহমান।

তার করা তিন মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওটির দুই মিনিট ২৫ সেকেন্ড ও দুই মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের সময় একটি বড় আকারের গোলাপি ডলফিনকে দেখতে পাওয়া যায়।

গোলাপি ডলফিনটি ছিল আকারে অন্যগুলোর তুলনায় বড়।

সৈকতে থাকা লাবণী পয়েন্ট সার্ফার ক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদিন ভুট্টো বলেন, ডলফিনের দুটো দল দেখেছি। একটা দলে একটু ছোট আকারের কালো রঙের ডলফিনগুলো ছিল। সেগুলো বাতাসে ডিগবাজি দিচ্ছিল।

আর অন্য একটা দলে গোলাপি রঙের ডলফিনটা ছিল। ওইটা অনেক বড়। ওই দলে সাদা ধূসর কয়েকটা ডলফিন ছিল। গোলাপিটার সঙ্গে একটা কালো বড় ডলফিন বেশিরভাগ সময় ছিল। দুই দলে ২৫টার মত ডলফিন ছিল।

গোলাপি ডলফিন হলো ইন্দো প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিন। বাংলাদেশের সাগরে যে ছয় ধরনের ডলফিন আছে তার মধ্যে এটি একটি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, ওই ভিডিওটি দেখেছি। সেখানে যে গোলাপি ডলফিনটি দেখা গেছে সেটি পূর্ণ বয়স্ক। ওই দলে থাকা অন্যগুলোও একই প্রজাতির- গোলাপি ডলফিন।

সেগুলো আরো বড় হলেই তাদের গায়ের রঙ গোলাপি হবে। এরা সচরাচর উপকূলের কাছাকাছি থাকে। তবে সৈকতের এতটা কাছাকাছি তারা আসে না। এখন নিরিবিলি থাকায় হয়ত কাছে চলে এসেছিল। বাংলাদেশে যেসব ডলফিন আছে তারমধ্যে এটি অন্যগুলোর চেয়ে কম দেখা যায়।

বাংলাদেশে গোলাপি ডলফিনের দেখা মিলেছে হাতেগোনা কয়েকবার।

২০০২ সালে প্রথম বাংলাদেশে ইন্দো প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিনে (গোলাপি ডলফিন) অস্তিত্বের কথা জানায় ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি।

এরপর ২০১১ সালে বঙ্গোপসাগরে একবার এবং ২০১৮ সালে সুন্দরবনের পশ্চিম অংশে আরেকবার গোলাপি ডলফিনের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। এরপর এবার কক্সবাজার সৈকতের কাছে গোলাপি ডলফিন দেখা গেল।

জুওলজিক্যাল সোসাইটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার দে বলেন, সুন্দরবনের দক্ষিণ অংশে এবং সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে আগে গোলাপি ডলফিন দেখা গেছে। কক্সবাজার সৈকতের এ অংশে তাদের আগে খুব একটা দেখা যায়নি।

সাগরের এ অংশে জরিপ হওয়া উচিত। তাতে এদের বিষয়ে জানা যাবে। গভীর সাগরে ট্রলিং করে মাছ ধরার কারণে গোলাপি ডলফিন মারা যায়। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।

অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, কক্সবাজার সৈকতসহ আশেপাশের এলাকায় অতিরিক্ত মানুষের উপস্থিতির কারণে তারা হয়ত আগে আসেনি। কিন্তু এসব এলাকায় এমনই থাকার কথা। সঠিক ব্যবস্থাপনা করা গেলে মানুষের চিত্ত বিনোদন ও প্রাণিদের সহাবস্থান সম্ভব।

 লবণাক্ত পানির বাসিন্দা গোলাপি ডলফিন আকারে অন্য ডলফিনের চেয়ে খানিকটা বড় হয়। দৈর্ঘ্যে ৮-১০ ফুটের এই ডলফিনের ওজন হয় ৯০ কেজির মতো।

চায়না হোয়াইট ডলফিন নামেও এই ডলফিনটি পরিচিত বিভিন্ন অঞ্চলে।