ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

একটি স্বপ্নের ফসল একটি স্বাধীন দেশ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০১৯  

আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ফসল; এটা সর্বজন স্বীকৃত। তার স্বপ্নে ভর করেই নিরস্ত্র বাঙালি জাতি হিংস্র পাকিস্তানি বাহিনীর মোকাবেলায় জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছিল। সেখান থেকেই ছড়িয়েছিল সোনালী স্বপ্নের দানা।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শক্তিই গোটা জাতিকে একত্রিত করেছিল। আসলে মুক্ত বিহঙ্গের মত জীবনযাপনের স্বপ্ন বাঙালি জাতির মধ্যে অনেক আগে থেকেই সুপ্তভাবে বাস করতো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তা বেগ পায়। জীবন্ত হয়ে ওঠে।

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নিয়ে তার একান্ত স্বপ্নের কথা সাহসের সঙ্গে, আস্থার সঙ্গে,  বিশ্বাসের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশের অভ্যুদয় লগ্নেরও বহু আগ থেকে। ১৯৪৭ সাল থেকেই তিনি বাংলাদেশকে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। কবি অন্নদাশঙ্কর রায় তার স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন এভাবে- শেখ সাহেবকে আমরা প্রশ্ন করি,  ‘বাংলাদেশের আইডিয়াটা প্রথম কবে আপনার মাথায় এলো?’ শুনবেন’ বলে তিনি (বঙ্গবন্ধু) মুচকি হেসে বলেন, ‘সেটা ১৯৪৭ সাল। তখন আমি সোহরাওয়ার্দী সাহেবের দলে। তিনি ও শরৎচন্দ্র বসু চান যুক্তবঙ্গ। আমিও চাই সব বাঙালির এক দেশ। বাঙালিরা এক হলে কি না করতে পারত। তারা জগৎ জয় করতে পারত।’ বলতে বলতে তিনি উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠেন। তারপর বিমর্ষ হয়ে বলেন, ‘দিল্লি থেকে খালি হাতে ফিরে এলেন সোহরাওয়ার্দী ও শরৎ বোস। কংগ্রেস বা মুসলিম লীগ কেউ রাজি নয় তাদের প্রস্তাবে। তারা হাল ছেড়ে দেন। আমিও দেখি যে আর কোনো উপায় নেই। ঢাকায় চলে এসে নতুন করে আরম্ভ করি। তখনকার মতো পাকিস্তান মেনে নিই। কিন্তু আমার চাওয়া কেমন করে পূর্ণ হবে এই আমার চিন্তা। হবার কোনো সম্ভাবনাও ছিল না। লোকগুলি যা কমিউনাল! বাংলাদেশ চাই বললে সন্দেহ করতো। হঠাৎ একদিন রব উঠল, আমরা চাই বাংলা ভাষা। আমিও ভিড়ে যাই ভাষা আন্দোলনে।

ভাষাভিত্তিক আন্দোলনকেই একটু একটু করে রূপ দিই দেশভিত্তিক আন্দোলনে। পরে এমন একদিন আসে যেদিন আমি আমার দলের লোকাদের জিজ্ঞাসা করি, আমাদের দেশের নাম কী হবে? কেউ বলে পাক-বাংলা। কেউ বলে পূর্ণ বাংলা। আমি বলি, না, বাংলাদেশ। এটাই শেষ কথা। তারপর আমি স্লোগান দেই, জয় বাংলা। আসলে ওরা আমাকে বুঝতে পারে নাই। জয় বাংলা বলতে আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির জয়। যা সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে।’
বঙ্গবন্ধুর এ কথাগুলোই প্রমাণ করে তিনি বাঙালিদের নিয়ে কতটা স্বপ্ন দেখতেন। শুধু কি একটি স্বাধীন দেশই চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু? শুধুমাত্র একখণ্ড মুক্ত ভূমির জন্যই এত ত্যাগ তিতিক্ষা? অবশ্যই না। তাহলে প্রশ্ন সামনে দাঁড়ায়, স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? গোটা জাতি কীসের আশায় বুক বেঁধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে নেমেছিল। বঙ্গবন্ধুর চাওয়া ছিল কতটুকু?

আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে জয় ছিনিয়ে এনে কতটুকু তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন। কেমন বাংলাদেশ চাই প্রসঙ্গে ১৯৭২ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বেতার ও টিভি ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার সরকার অভ্যন্তরীণ সমাজ বিপ্লবে বিশ্বাস করে৷ এটা কোনো অগণতান্ত্রিক কথা নয়৷ আমার সরকার ও পার্টি বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ৷ একটি নতুন ব্যবস্থার ভিত রচনার জন্য পুরাতন সমাজব্যবস্থা উপড়ে ফেলতে হবে৷ আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়বো৷’ ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর সংবিধান বিলের উপর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলার মানুষের কাছে ওয়াদা করেছিলাম বাংলার মানুষকে মুক্ত করতে হবে, বাংলার মানুষ সুখী হবে, বাংলার সম্পদ বাঙালিরা ভোগ করবে। সেই জন্য সংগ্রাম করেছিলাম’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দুঃখী বাঙালির মুখে হাসি ফোটানো। তার আকাক্সক্ষা ছিল শোষণহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। স্বপ্ন দেখেছেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের। অসা¤প্রদায়িক চেতনা ছিল তার মজ্জাগত। মানবিক চেতনায় তিনি সর্বদা সজাগ ছিলেন। তিনি ছিলেন বাঙালির ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির ধারক।

সেই স্বপ্ন পূরণে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে একটি শোষণহীন সমাজভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে চেষ্টা করেছেন সকল দ্ব›দ্ব ভুলে সম্মিলিতভাবে এক কাতারে দাঁড়িয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়তে। কিন্তু হায়েনাদের রক্ত-পিপাসা তা থমকে দিয়েছে। কাকড় গুঁড়া ধুলার মতো স্বপ্নগুলোকে মলিন করে দিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলে পড়ে শকুনের দল। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু সংবাদের সঙ্গে আরও একটি সংবাদ দেশের মানুষের কথা হয়ে বাতাসে ভাসতে শুরু করে। তা হচ্ছে- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের দায়বদ্ধতা। আজও সে সংবাদ মুক্ত বাতাসে ঘুরছে। নিভৃতে কান পাতলেই সে সংবাদ শোনা যায়। সে সংবাদই সাহস জোগায়, অনুপ্রেরণা দেয়। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা বার বার আশ্রয় নিই বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগে। আর সেই দায়বদ্ধতা থেকেই উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় লাল সবুজের নিশানা নিয়ে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়ি’ বেয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আজকের ১৬ কোটি জনগণের আস্থা ও সমর্থনের প্রতীক হয়ে আছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা। তারই হাত ধরে নিশ্চিতভাবে, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত হবে।