ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজানের শব্দ পরিবর্তন সহিহ হাদিসেরই আমল

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২০  

হাদিসের আলোকে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় আজানের শব্দ পরিবর্তন করা যায়। আজানের শব্দ পরিবর্তন সহিহ হাদিসেরই আমল।

সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে পাকিস্তান, কুয়েত ও আরব আমিরাত আজানের শব্দে পরিবর্তন এনেছিল। এরপর সে তালিকায় নাম লেখিয়েছে পবিত্র নগরী মক্কা।

দুর্যোগের কারণে আজানে পরিবর্তন করা যেতে পারে। সহিহ হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) মুয়াজ্জিনকে তা করতেও বলেছেন। হাদিসে দু’টি শব্দ এসেছে। তার একটি হলো ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম। আর অন্যটি হলো ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’। পবিত্র মক্কা নগরীর আজানে ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে।

হাদিসে আজানের শব্দ পরিবর্তন করে নামাজের জন্য আহ্বান করার কথা রয়েছে। যেমন- যদি কোনো অঞ্চলে আবহাওয়াজনিত প্রচণ্ড ঠান্ডা, ঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কুয়াশায় অথবা মহামারি দেখা দেয় তবে সেসব অঞ্চলের আজানের শব্দে পরিবর্তন করা যেতে পারে মর্মে অনেক হাদিসে বর্ণনা রয়েছে।

হাদিসে এসেছে- প্রচণ্ড এক শীতের রাতে হজরত ইবনে ওমর (রা.) যাজনান নামক স্থানে আজান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেন-

صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ

‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ অর্থাৎ তোমরা আবাসস্থলেই নামাজ আদায় করে নাও।’

পরে তিনি সবাইকে জানালেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বললেন এবং সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে নামাজ আদায় কর।’ (সহিহ বুখারি :৬৩২)।

অন্যত্র ইবনু আববাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি তাঁর মুয়াজ্জিনকে এক প্রবল বর্ষণের দিনে বললেন, যখন তুমি (আজানে) ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে, তখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ বলবে না; বলবে- ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ (তোমরা নিজ নিজ বাসগৃহে নামাজ আদায় কর)। তা লোকেরা অপছন্দ করল। তখন তিনি বললেন- আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিই (রাসূলুল্লাহ সা.) তা করেছেন। জুমা নিঃসন্দেহে জরুরি। আমি অপছন্দ করি তোমাদের মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার অসুবিধায় ফেলতে। (সহিহ বুখারি :৯০১)।

সুতরাং মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবে কুয়েত, আরব আমিরাত, পাকিস্তানের পর পবিত্র নগরী মক্কায় আজানের শব্দ পরিবর্তনে কোনো অসুবিধা নেই। হাদিসের আলোকে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় আজানের শব্দ পরিবর্তন করা যায়।

উল্লেখ্য, ইসলামের ভাষ্যমতে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি মানুষ যখন আল্লাহকে ভুলে যায়, বেপরোয়া হয়ে ওঠে তখনই আল্লাহর গজব নেমে আসে শান্তির পৃথিবীতে।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘ভূমিতে ও পানিতে সব জায়গায়, লোকজন কুকাজে অশান্তি ছড়ায়, যেরূপ কাজ তারা করে থাকে, আল্লাহ চান তার শাস্তি দিতে.......’ (সূরা: রূম, আয়াত: ৪১)।

বর্তমানে পাপ ও পতনের চরমে পৌঁছেও মানব সভ্যতা প্রতি মুহূর্তে নানান বিপর্যয়ের মুখোমুখী। এইডস, ডেঙ্গু, ইবোলা, নিপা, জিকা, কতো নাম-জাতের রোগেই না আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। (ইবনে মাজাহ, ৪০১৯)।

মহামারি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটি আল্লাহর গজব বা শাস্তি, বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারি। অতএব, কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১০৬৫)। তাই আমাদের উচিত, যেখানে এ ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দেবে, সেখানে যাতায়াত থেকে বিরত থাকা।

মহামারি আল্লাহর গজব হলেও এতে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না। রাসূল (সা.) এর ভাষায় মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহিদ। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহিদ- মহামারিতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহিদ হলো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮২৯)। 

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, মহামারিতে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য শাহাদাত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৩০)।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার কাছে ফরিয়াদ, তিনি যেন শীঘ্রই মুমিন মুসলমানকে মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। সারা দুনিয়াকে করোনামুক্ত করে দেন। আমিন।