ব্রেকিং:
আসন ভাগাভাগি নিয়ে ১৪ দলের বৈঠক রাতে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ‘ভুয়া রুটিন’ ফেসবুকে এলজিইডির পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে চাঁদপুরের ব্যাপক পরিবর্তন চাঁদপুর জেলা আ’লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ইঞ্জি: মোহাম্মদ হোসাইনের উদ্যোগ হাজীগঞ্জে সেলাই মেশিন বিতরণ হাইমচর ইউএনও চাই থোয়াইহল চৌধুরী বিদায় সংবর্ধনা চাঁদপুরে জেলা প্রশাসন অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা-২০২৩ অনুষ্ঠিত চাঁদপুরে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টরে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পৌনে ২ লাখ মতলব উত্তরের দীপু চৌধুরীর স্মরনে দোয়া ফরিদগঞ্জে মোটরসাইকেল চুরি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ পাটওয়ারী মৃত্যুতে শোক ‘দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নবজাতকরা পেল উপহার দাগনভূঞা প্রেসক্লাবের নিজস্ব ভবন উদ্বোধন সাঁকো থেকে পড়ে প্রাণ গেল তরুণের ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারায় ৩ আড়তদারকে জরিমানা ‘ভোটের মালিক জনগণই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন’ শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক নাসিম দম্পতি ভূমি-অর্থ-ব্যবসা সবই বেড়েছে নিজাম হাজারীর দাম বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজ বিক্রি
  • রোববার ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২৫ ১৪৩০

  • || ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে সহজলভ্য দেশিয় অস্ত্র

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২৩  

সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লায় দেশি-বিদেশী আগ্নোয়াস্ত্র এবং ধারালো অস্ত্রসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর মধ্যে দেশি বিদেশি ৩টি পিস্তল, ২টি রিভলবার, ২টি পাইপগান, ১৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি ম্যাগজিন ও ৬ রাউন্ড কার্তুজ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি উদ্ধার হয়েছে ধারালো অস্ত্র টেঁটা। মেঘনা উপজেলা থেকেই তিনটি অভিযানে শতাধিক টেঁটা, ৫টি বল্লম, রাম দা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতিসহ নানান ধরনের হাতে বানানো ধারালো ও সূঁচালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অস্ত্র উদ্ধারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতে, সীমান্ত এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের আধিক্য থাকে, সীমান্তের ওপার থেকে মাদকের সাথে চোরাই পথে এসব অস্ত্র আসে। পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বা রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তাওে শোডাউনে এসব অস্ত্র ব্যবহার হয়। অন্যদিকে নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে বিরোধ-সংঘর্ষে দেশিয়া ধারালো অস্ত্রের ব্যবহার হয়। ছিনতাই বা ডাকাতিতে এসব অস্ত্রের ব্যবহার বেশি।


কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান, কুমিল্লায় নিয়মিত অভিযানের ভিত্তিতেই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। নির্বাচনতে সামনে রেখে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। শীঘ্রই দেশিয় ধারালো অস্ত্রের উৎসগুলোতেও সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার সদও দক্ষিণ থানাধীন পদুয়ারবাজার বিশ^রোড এলাকা থেকে ১৫ মামলার আসামী তকদীর হোসেন বুলেটকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তার কাছ থেকে ব্রাজিলে তৈরী একটি পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর দিনই ডিবি পুলিশের অভিযানেই কোতয়ালী থানাধীন ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা বউয়ারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২টি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, ৩টি ম্যাগজিনসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা। এছাড়া কোতয়ালী থানা, দেবিদ্বার থানাসহ অন্যান্য থানা পুলিশের অভিযানেও অস্ত্র উদ্ধার ও আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। পাশাপশি র‌্যাব বিজিবিও ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করছে।
গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়–য়া জানান, ধারনা করা যায়- সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মাদকের সাথে আনা নেয়া অস্ত্রও সহজলভ্য। যে কারণে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়মিত অভিযানে আসামিসহ আটক হচ্ছে। যে কোন অস্ত্র উদ্ধারেই আমরা সচেষ্ট আছি।


উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুমিল্লা নগরীর ছায়াবিতানে মাদক উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এদিকে দেশিয় ধারালো অস্ত্র সবচেয়ে বেশি উদ্ধার হয়েছে মেঘনা উপজেলা থেকে। গত একমাসে মেঘনা থানায় অস্ত্র আইনে তিনটি মামলাও হয়েছে, সেখানে ১৪ জনকে আসামি করা হয়। তবে জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, সেসব মামলায় গ্রেপ্তার এক জন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ঘটনায় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিজাম সরকার টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। সে সময় অন্তত ১২ জন যারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তারা সবাই টেঁটা বিদ্ধ ছিলেন। নিহত নাজিমও অস্ত্র মামলার আসামী ছিলেন।
মেঘনা থানার ওসি মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, চরাঞ্চলের মানুষ মাছ শিকার এবং চোর ডাকাতের হাত থেকে বাঁচতে টেঁটা ব্যবহার করে।এখন সেগুলো আবার তাদের আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় সংঘর্ষেও ব্যবহার করছে। আমরা এগুলোর উৎস খোঁজার চেষ্টা করছি। অভিযান চলছে।
বিশিষ্ট অপরাধ বিশ্লেষক আইনজীবী এএমএম মইন বলেন, দেশিয় ধারালো অস্ত্রের উৎস কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা গেলে সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হবে না। দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য ছুরি, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল এসব দোকানপাটেই পাওয়া যায়- আবার এসব প্রাণঘাতিও। হত্যা মামলাগুলোর দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে - বেশির ভাগই ছুরি-দা ব্যবহার করে হত্যা হচ্ছে। সে দিকে বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এসব বিক্রি ও বানানোর বিষয়ে নজরদারি করতে পারে। অন্যদিকে, সামনে যেহেতু নির্বাচন- সংঘাত দমাতে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীকে আরো বেশি সচেষ্ট হতে হবে।   


কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান আরো বলেন, আমরা গত কয়েক মাসে অন্তত হত্যাকান্ডের ঘটনায় দেখেছি- স্যুইচ গিয়ার ছুরি ব্যবহৃত হয়েছে। আমরা এসব ধারালো অস্ত্রের উৎস বা দোকানে অভিযান চালাবো। আর চরাঞ্চলের যেসব এলাকায় টেঁটার মত দেশিয় অস্ত্র বানানো হয় সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। আর সীমান্ত কেন্দ্রিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। নির্বাচনকে সামনে রেখেও কাজ চলছে।