ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তীব্র গরমে একদিনে ১০ জন অসুস্থ হয়ে চাঁদপুর হাসপাতালে ভর্তি

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩  

দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। গরমে ঘরে বাহিরে কোথাও কেউই স্বস্তিতে নেই। একদিকে রের্কড পরিমান তাপমাত্রা, অন্যদিকে বৃষ্টির দেখা নেই। এরমাঝে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এমন অতিরিক্ত তাপমাত্রায় চাঁদপুরে বিভিন্ন ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বৃদ্ধ, শিশুসহ সাধারণ মানুষজন।

তাপমাত্রায় হিটস্ট্রোকসহ নানা ভাবে অসুস্থ হয়ে একদিনেই চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ১০ জন রোগী। এরমধ্যে লিলুফা বেগম (৫৫) নামের এক নারী হিটস্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেছেন। 

খবর নিয়ে জানা গেছে, ৬ জুন মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে না পেরে বিভিন্ন ভাবে অসুস্থ হয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ১০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।

এদের মধ্যে চাঁদপুর শহরের ৩ নং কয়লাঘাট এলাকার তকদীর হোসেন মাঝির স্ত্রী লিলুফা বেগম (৫৫) হিট স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেন। একই ভাবে হিট স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন চাঁদপুর সদর উপজেলার সেকদী গ্রামের আলী আক্কাছের স্ত্রী রেখা বেগম (৫৫)। এছাড়াও অন্তত আরো ১০ জন নারী পুরুষ অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মাথা ঘুরে, এবং অচেতন হয়ে পড়ে অসুস্থ হয়ে জরুরী বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ ভর্তি রয়েছেন, কেউবা আবার প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং জরুরী বিভাগের নার্সরা জানান, এদিন এক ঘন্টার মধ্যেই ৪/৫ জন রোগী গরমে অসুস্থ হয়ে জরুরী বিভাগে চিকিৎসাসেবার জন্য এসেছেন। এরবাইরেও জেলার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সাধারণ মানুষজন জ্বর, সর্দি, কাশি, হ্যাঁচিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানা গেছে।

ওইসময়ে হামপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার বিপ্লব দাস জানান, নিহত নীলুফা বেগম অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ঘুরে পড়ে অচেতন হয়ে পড়লে তার স্বজনরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন।  কিন্তু আমরা তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত দেখতে পাই।

 তিনি আরো জানান, নিলুফার স্বজনরা জানিয়েছেন তিনি অতিরিক্ত তাপমাত্রায় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে তিনি হিটস্ট্রোক করেই হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। 

চিকিৎসকদের মতে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মানবদেহের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছালে দেহ আর নিজেকে নিজে শীতল রাখতে পারে না। কারণ, এ সময় মস্তিষ্ক দিশেহারা হয়ে পড়ে।

মস্তিষ্কের ‘হাইপোথ্যালামাস’ অংশটি দেহের নানা অঙ্গের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের তাপমাত্রার একটি আদর্শ মান আছে এই হাইপোথ্যালামাসে—৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ওপরে গেলে হাইপোথ্যালামাস নানা কায়দায় দেহ থেকে তাপ বের করে দেয়। এই তাপ বের করে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া হলো ঘাম। যাহোক, হাইপোথ্যামালাস ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপ উঠে গেলে সেটাকে কমানোর জন্য নানা কারিকুরি করে। কিন্তু এর ওপরে উঠলে আর সামলাতে পারে না। তখন ঘাম দিয়েও লাভ হয়নি। শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিক্রিয়া দেখায়, ফলে অঙ্গগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে। একেই বলা হয় হিটস্ট্রোক। এ সময় ১০-১৫ মিনিটে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মতো হয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা এবং হিটস্ট্রোক বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আসিবুল আহসান চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম ঝরার কারণে মানুষের দেহে পানি শূন্যতা তৈরি হয়। যার কারণে মানুষের ব্লাড প্রেশার কমে গিয়ে, দেখা গেছে অনেকে মাথা ঘুরে কিংবা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। আর এই সমস্যাটি বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, যাদের অতিরিক্ত তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা কম, দেখা গেছে তারাই অতিরিক্ত তাপমাত্রায় হিটস্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এদের মধ্যে কেউ কেউ হিটস্ট্রোকে মৃত্যুবরণও করে থাকেন। আর এই অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে সকলকে বেশি বেশি পানি পান করা এবং শরীরের পানীয় ঘাটতি পূরনীয় জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।