ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স র‌্যাংকিং - দেশসেরা ছাগলনাইয়া

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স র‌্যাংকিংয়ে সেরা স্থান অধিকার করেছে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাসহ নানা সূচকে এগিয়ে থাকায় মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত র‌্যাংকিংয়ে বিগত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দেশ সেরা তালিকায় শীর্ষ স্থান দখলে নেয়।

তবে সর্বশেষ প্রকাশিত অক্টোবর ও নভেম্বরে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি শীর্ষ তালিকায় একধাপ পেছনে গিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

Feni

রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, রোগীদের সন্তুষ্টি ও আস্থা অর্জন, চিকিৎসক, সেবিকা, কর্মকর্তা, ও কর্মচারীদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত, সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক দিকে বিশেষ অবদানসহ বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে থাকায় এ র‍্যাংক পেয়েছে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৬৬০ সালের দিকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। পরবর্তীর্তে নানা সময়ে কর্মপরিধি বাড়িয়ে এর নাম দেওয়া হয় উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

Feni

দীর্ঘদিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিয়ে আসছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে আউটডোর সেবা, ইনডোর সেবা, সার্জারি, সিজার, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি সেবাসহ ৫০ শয্যার হাসপাতাল কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়াও হাসপাতালটিতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের জন্য ১০ শয্যার হাই ডিপেন্ডেন্স ইউনিট (এইচডিইউ) রয়েছে। হাসপাতালে আগত রোগীদের সঙ্গে থাকা বাচ্চাদের খেলাধূলা ও বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে কিড্স জোন। রয়েছে পুরুষ, মহিলা, শিশু ও গাইনী ওয়ার্ড। স্বল্প পরিসরে রাখা হয়েছে কেবিনও।

Feni

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোর অবস্থা খুবই নাজুক। হাসপাতালটির দুটি ভবন রয়েছে। পরিত্যাক্ত প্রায় পুরাতন ভবনের নিচ তলায় প্রশাসনিক কার্যক্রম, জরুরি বিভাগ ও স্টোর রুম রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড, শিশু কর্ণার এবং এইচডিইউর কার্যক্রম চলছে। পেছনে স্থাপিত নতুন ভবনের নিচ তলায় আউটডোর, কনসালটেন্ট কক্ষ, আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার, গাইনি বিভাগ ও তৃতীয় তলায় কেবিন, এইচডিইউ ও পুরুষ ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আকবর হোসেন জানান, তিনি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ৫ দিন ধরে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালটি মোটামুটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রয়েছে। প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তার ও সেবিকারা মোটামুটি আন্তরিক।

feni

হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, শুধুমাত্র গত জানুয়ারিতে এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে ১১৭ জন রোগী এক্সরে, ২৩৮ জন রোগী ইসিজি এবং ১৭৬ জন রোগী আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা পেয়েছেন। বিগত এক বছরে এ হাসপাতালে বহির্বিভাগে ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৫২ রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। একইভাবে হাসপাতালটিতে গত বছর জরুরি বিভাগে ৩৩ হাজার ৫৩৮ রোগী সেবা নিয়েছে, ভর্তি হয়েছে ১০ হাজার ১৮৬ রোগী, নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৯০৯টি। সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ২৯ জনের, মেজর অপারেশন হয়েছে ১৯টি।

বর্তমানে হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগ, অন্তঃবিভাগ, প্যাথলজি, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং সার্বক্ষণিক জরুরি সেবাসহ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু রয়েছে। এছাড়াও IMCI, NCD, ANC, PNC, DOTs, breastfeedingসহ বিভিন্ন কর্নার চালু রয়েছে। ফার্মেসি থেকে full course antibioticsসহ ডায়াবেটিস ও প্রেসারের ওষুধ পুরো একমাসের দেওয়া হয়।

feni

হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সায়ফুল্লাহ আল মহিউদ্দিন ভূঞা বলেন, হাসপাতালটিতে নিয়মিত সিজার অপারেশন, হার্নিয়া অপারেশন, অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন, অর্থোপেডিক্স অপারেশনসহ এ হাসপাতালে নানা সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এখানে বহি:বিভাগ ও অন্ত:বিভাগে ভর্তি হওয়া রোগীদেরকে সরবরাহ সাপেক্ষে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়াও সাপেকাটা রোগীদের চিকিৎসায় এখানে এন্টিভেনম মজুদসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীদের সঙ্গে আসা শিশুদের জন্য রয়েছে পৃথক কিড্স জোন। অতিগুরুত্বপূর্ণ রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে হাই ডিপেন্ডেন্স ইউনিট। এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ইনডোরে ভর্তি হয়ে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে। এছাড়াও আউটডোরে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ জন রোগীকে ব্যবস্থাপত্রসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়।   

উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় বলেন, আমি এখানে বিগত সনের ১৯মে যোগ দিয়েছি। এরপর থেকে সেবার মান বাড়িয়ে রোগীদের আস্থা অর্জন করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ হাসপাতালে অতি গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের জন্য ১০ শয্যার হাই ডিপেন্ডেন্স ইউনিট চালু করি। এই হাসপাতালে নিয়মিত যেসব সেবামূলক কার্যক্রম হয় সেগুলো কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতে সার্ভারে পাঠানো নিশ্চিত করি। হাসপাতালের প্রতিটি সেবা সেবা নিশ্চিত করতে সরাসরি পর্যবেক্ষণ শুরু করি। আমার যোগদানের ৪ মাসের মাথায় হাসপাতালটি দেশ সেরা তালিকায় শীর্ষ হয়।

Feni

এখানকার চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই আন্তরিক হওয়ায় ২০২২ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে টানা ২ মাস স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঐঝঝ স্কোরিং এ সারা দেশে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রথম স্থান অর্জন করে। বর্তমানে হাসপাতালটি ১শ শয্যা করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে হাসপাতালের অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন মর্যাদাক্রম নির্ণয় ও সেই অনুযায়ী পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে ‘সকলকে পেশাদারিত্বে উদ্বুদ্ধ করা ও উৎসাহ দেওয়ার করার উদ্দেশে ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি সহযোগিতায় হেলথ সিস্টেম ট্রেনিং কার্যক্রম চালু করা হয়। এ কার্যক্রমের আওতায় মাসিক স্কোরের উপর ভিত্তি করে বার্ষিক স্কোর প্রস্তুত করা হয়। বার্ষিক স্কোরের উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ স্কোর করা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে রোগীর সন্তুষ্টি যাচাইয়ের মাধ্যমে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়ে থাকে।