ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

প্রথম আলো ও Daily Star কি দায় এড়াতে পারে?

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২১  

সাংবাদিক রোজিনা ইস্যুটি নিয়ে দিনকে দিন জল ঘোলা হয়েই যাচ্ছে। যতই তদন্ত ও পুণঃতদন্ত হচ্ছে ততই এ কথা প্রতীয়মান হচ্ছে একটি প্রশ্নে—প্রথম আলো পত্রিকা কি রোজিনা ইস্যুর দায় এড়াতে পারবে?

এ ঘটনায় Daily Star–প্রথম আলোর ভূমিকা অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। তারা যেখানে কোনো সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে ‘ব্রেকিং নিউজ’ আকারে প্রচার করতে পারদর্শী, তারাই-বা এত বড় একটা খবর ৬ ঘণ্টা ধরে চেপে রাখল কেন?

সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা পরিস্থিতিটি জানতে পারলে নিশ্চয়ই তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতেন এবং একটা সুরাহার চেষ্টা করতেন। জাতীয় প্রেসক্লাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ৫০ কদম দূরে এবং দুপুরের খাওয়ার সময় বহু সাংবাদিক নেতাই তখন ক্লাবে ছিলেন।
তাহলে প্রথম আলো নিজেই কি বিষয়টিকে এ পর্যায়ে বাড়তে দিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় নিয়ে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চেয়েছে।

এক-এগারোর আমলে ‘মাইনাস টু’ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ড. ইউনূসের সঙ্গে মিলে রাজনৈতিক দল গঠন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধে প্রকাশ্য দৌড়ঝাঁপ ও ভোটের পরদিন তাদের প্রথম পাতায় নারী ভোটারদের কপালে সিঁদুর চড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিতপূর্ণ খবর ছাপানো, যশোরে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশের স্থান হিসেবে রামকৃষ্ণ মিশনের নাম জুড়ে দিয়ে সারা দেশের মিশনগুলোতে মৌলবাদীদের আক্রমণ উসকে দেওয়া, শাহবাগে আন্দোলনরত নারীদের চরিত্র হনন করা গল্প প্রকাশ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া আমার দেশ পত্রিকার পাঠকদের বাজার ধরার চেষ্টা এবং তাদের নিজেদের অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্র আবরারের মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াসহ উল্লিখিত প্রতিটি অভিযোগ এত দিন ডেইলি স্টার-প্রথম আলো তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নগ্ন হামলা হিসেবে প্রচার করে এসেছে। রোজিনা নির্যাতনের ঘটনাকে তারা নাকি এখন সেসব দাবির সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাজির করছে? আন্দোলনকারীরাই কি তবে তাদের এ পথ করে দিয়েছে?

সাংবাদিক সমাজ যখন রোজিনার ওপর আক্রমণকে সব সাংবাদিক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চরম আঘাত হিসেবে বিবেচনা করে আন্দোলন করছে, তখন প্রথম আলোর সম্পাদক পরিষদ তখন ঘটনাটিকে কেবল একটা পত্রিকার কণ্ঠরোধের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে বিবৃতি দিল!

কেউ কেউ দেশের ভেতর কোনো জনমত তৈরির চেষ্টা না করে সোজা চলে গেলেন বিদেশি বন্ধুদের কাছে। এত দিন তারা অভিযোগ করে এসেছে, সরকার নাকি ডেইলি স্টার–প্রথম আলোতে বিজ্ঞাপন দিতে বাধা দিচ্ছে। যেখানে সাংবাদিক সমাজ নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস কনফারেন্স বর্জন করেছে, সেখানে ডেইলি স্টার তাদেরই প্রেসনোট চাররঙা বিজ্ঞাপন আকারে ছেপে এ সুযোগে সরকারি বিজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল না তো?

তা ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক এভাবে আক্রান্ত হলে ডেইলি স্টার–প্রথম আলো কিংবা তাদের সাংবাদিকেরা কি নির্যাতিতের পাশে এসে দাঁড়াত? তাদের নাকি বড় ধরনের জাত্যভিমানও রয়েছে! রোজিনার মুক্তির পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের ‘ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা’ জানানো বক্তব্যও অনেকের কানে লেগেছে।

সাংবাদিক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র যেকোনো মূল্যে ব্যর্থ করে দিতে হবে। যারা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়, তাদেরও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে যেসব রাজনৈতিক দলের গোড়াতেই গলদ, তাদের মায়াকান্নারও আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।

ডেইলি স্টার–প্রথম আলোর স্বার্থে নয়, বরং তারা কিংবা অন্য কেউ যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত এ বিষয়কে অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য আন্দোলনের নেতৃত্ব সাংবাদিক সমাজ অনেক চাপ সহ্য করেও নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। মানুষ যখন তথ্য জানতে চায়, মূলধারার গণমাধ্যম যদি সেন্সরশিপে পড়ে যায়, তখন সবকিছুই চলে যায় গুজবের অধিকারে। এবার সাংবাদিক নেতারা প্রথম থেকেই সচেতন ছিলেন যেন আন্দোলনটি বেহাত হয়ে না যায়।

তবে সরকারের সংবেদনশীল অংশ ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুবিচার দাবি করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তো বলেই ফেলেছেন, এ ঘটনায় বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মুখে কীভাবে কালিমা লেপেছে। অবশেষে পাঁচ দিন পর রোজিনার জামিনও মিলেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার ওপর আস্থা রাখতেই হবে।