ব্রেকিং:
হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত দেশজুড়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর দেশজুড়ে যেসব কার্যালয়-স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-আগুন ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে, একটু সময় দিন: সেনাপ্রধান ১১টার মধ্যে শহীদ মিনারে জড়ো হতে বললেন আসিফ মাহমুদ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শহীদ মিনারে স্লোগান দিচ্ছেন রিকশাচালকেরাও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের গেজেট প্রকাশ পুরো আগস্ট কালো ব্যাচ পরতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের
  • শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৯ ১৪৩১

  • || ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

লক্ষ্মীপুরে যেসব কারণে কমছে মহিষের দুধ উৎপাদন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২৪  

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আজ। ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়। বলা হয়, আমিষের চাহিদার আট শতাংশ আসে দুগ্ধ থেকে। এ অবস্থায় মেঘনা উপকূলীয় লক্ষ্মীপুর জেলায় পুষ্টিকর মহিষের দুধের চাহিদা বাড়ছে। তবে কমছে মহিষ ও দুধ উৎপাদন। দুই বছর আগেও এই জেলায় ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার মহিষ ছিল। এখন তা ৫০ হাজার। সাত কারণে এখানে দিনদিন মহিষ ও মহিষের দুধের উৎপাদন কমছে। এ নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রান্তিক চাষিরা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার-পাঁচ বছর ধরে চরে মহিষ পালন কমছে। এর জন্য তারা সাতটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো- চরে মানুষের বসতি, চাষাবাদ বৃদ্ধি, খাদ্য-ঘাস সংকট, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ না পাওয়া, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করা, নদীপথে চুরি-ডাকাতি এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেতে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত মাটির কিল্লা নির্মাণ না করা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপকূলীয় চরাঞ্চল মহিষ পালনের জন্য বেশ উপযোগী। চরাঞ্চলেই মহিষের উৎপাদন বেশি। নদীর ১২টি দ্বীপচর মূল ভূখণ্ডে প্রায় ২০ হাজার মহিষ লালন-পালন করা হয়। এরমধ্যে সদরে পাঁচ হাজার ৭০০, রামগতিতে ছয় হাজার ৩০০, কমলনগরে ছয় হাজার এবং রায়পুরে এক হাজার ২০০।

যেসব কারণে কমছে মহিষের দুধ উৎপাদন

তবে বেসরকারি একাধিক সূত্র এবং ১৫ জন বাথান মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে অন্তত ৫০ হাজার মহিষ রয়েছে। দুধ ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যেই মালিকরা এসব পশু পালন করেন। দুর্গম বিভিন্ন চরে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই মহিষ পালন করলেও তা সরকারি জরিপে নেই। দুই বছর আগেও এই জেলায় ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার মহিষ ছিল।

রায়পুর মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ভারত থেকে ২৫০টি গর্ভবতী মহিষ ও বাছুর আমদানি করা হয়। দেশে দুধ উৎপাদন বাড়ানো, উপকূলের জনগোষ্ঠী ও সমবায় কৃষকদের ভাগ্যেন্নয়নে এসব উন্নতজাতের মহিষ আনা হয়।

যেসব কারণে কমছে মহিষের দুধ উৎপাদন

শুক্রবার (৩১ মে) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সংকটে রায়পুর কেন্দ্রটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। বর্তমানে সেখানে ১২২টি মহিষ রয়েছে। প্রকল্পের শুরুতে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লিটার মহিষের দুধ সংগ্রহ হতো। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৭০ থেকে ৮০ লিটার।

রায়পুর মহিষ কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মো. আবু বকরের ভাষ্যমতে, টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতি লিটার ১২০ টাকা দামে দুধ বিক্রি হচ্ছে। এখানে মহিষের সংখ্যা কম থাকায় এখন উৎপাদন কম হচ্ছে।

বাথান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার পশ্চিম ও দক্ষিণের মেঘনা নদীর দ্বীপচরগুলোতে মহিষের বাথান রয়েছে। সেখান থেকেই মহিষের দুধ আসে। বিশেষ করে রামগতি উপজেলার চর আবদুল্লাহ, তেলিরচর, মৌলভীর চর, চর মুজাম, চর আলেকজান্ডার, চর বাদাম; কমলনগর উপজেলার চর কাঁকড়া, মাইজের চর, চর শামছুদ্দিন; সদর উপজেলার চর রমনী মোহন, মেঘারচর; রায়পুর উপজেলার হাজীমারা, টুনির চর, কানিবগারচর, চরকাছিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার বাথান থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়। দিনে প্রায় ১০ টনেরও বেশি দধি বিক্রি হয়। ১৫০-২০০ টাকা কেজি ধরে দিনে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকার দধি বিক্রি হয়। বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

যেসব কারণে কমছে মহিষের দুধ উৎপাদন

এদিকে মহিষের কাঁচা দুধ থেকে তৈরি করা টক দধি লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার। সুস্বাদু ও জনপ্রিয়তায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর বেশ সুনাম রয়েছে। কয়েক যুগ ধরে সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এটি পছন্দের তৃপ্তিময় খাবার। দিনদিন এ দধির ব্যবসার প্রসারের পাশাপশি চাহিদাও বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘মহিষা দই’ দৈনিক ১০ টনেরও বেশি উৎপাদন হয়। আর বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টন মহিষের দই এ জেলায় বেচাকেনা হয়। এ দই উৎপাদনের জন্য প্রায় চার হাজার টন কাঁচা দুধ প্রয়োজন হয়। প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১৩০ টাকায়।