ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নোয়াখালীতে কৃষকের ক্ষেতে এখনো রয়েছে ‘সিত্রাং’ এর ভয়াবহ চিহ্ন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২২  

চলতি বছরের গত ২৪ অক্টোবর রাতে নোয়াখালীর উপকূলী উপজেলা, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচরে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও ভারি বৃষ্টিতে তিনটি উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও সদর ও কবিরহাটসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসে কাঁচা গাছ-পালা ঘর-বাড়িসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসলী জমি। কিন্তু ঝড় পরবর্তী এতদিন (প্রায় ৩ সপ্তাহ) পার হলেও কৃষি অধিদপ্তর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কোন তালিকা বা সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে উপজেলা ভিত্তিক কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হয়েছে। কিছু বরাদ্দ ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে তা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ভারি বর্ষণের কারণে জেলার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলী জমিতে পানি ঢুকে পড়ে, যারমধ্যে একবারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১,২৩৫ হেক্টর জমি। এরমধ্যে রোপা আমন ৭৯৮ হেক্টর, ৪০৫ হেক্টর শীতকালীন শাকসবজি ও শরৎকালীন সবজি ৩২ হেক্টর। দীর্ঘসময় ধরে জমিতে পানি জমে থাকায় শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। প্রচন্ড ঝড়ো বাতাসে নুয়ে পড়েছিলো আমন ধান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়া উপজেলায়। দুই জেলায় ফসলী জমির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১০০ হেক্টর, এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জে ২০০ ও হাতিয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৯০০ হেক্টর জমি।

কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ধানগুলো এখনও নুয়ে পড়ে আছে, যেটুকু ফলন পাওয়া যায় তার আশায় কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত কিছু সবজির ক্ষেতে নতুন করে বীজ বপন করছেন কৃষকরা। তবে পুঁজি সংকটে বেশির ভাগ কৃষকই নতুন করে চাষ করতে পারছেন না। ঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পেরে দিশেহারা অনেক কৃষক।

সুবর্ণচরের একাধিক কৃষক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আগে লাল শাক, মুলার শাকসহ বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজির বীজ পালানো হয়। ঝড়ের মাত্র কয়েকদিন আগে সেগুলোতে ফলন আসতে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতগুলোতে পানি জমে যায়। ২-৩দিন ধরে জমিতে পানি থাকার পর পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে সবজিগুলো। এরপর হাতেগুনা কয়েকজন কৃষক যাদের কাছে বীজ ছিলো, তারা নতুন করে জমিতে আবার আবাদ করেছে। বীজ বা নিজেদের কোন পুঁজি না থাকায় বেশির ভাগ কৃষকের জমিই অনাবাদি পড়ে আছে।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কৃষক লিটন দাস বলেন, চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহের দিকে রোপা আমন ধান ঘরে উঠানোর কথা ছিলো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তার এক একর জমির বেশির ভাগ ধান নুয়ে পড়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। যেটুকু ফলন পাওয়া যাবে তাতে করে বীজ ও কীটনাশকের খরচও ওঠবে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন কৃষি অফিস থেকে এখনও কোন সহযোগিতা তারা পাননি।

হাতিয়ার হরনি ইউনিয়নের আমেনা বেগম বলেন, বাড়ির সামনের আধা একর জমিতে তিনি শীতকালীন সবজি চাষ করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় জোয়ারের লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় সবগুলো সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। টাকা না থাকায় বর্তমানে জমিটি খালি পড়ে আছে। তিনি বলেন সরকারিভাবে আমাদের সবজির বীজ দিলে আবার পুনঃরায় জমিতে চাষ করতে পারতাম।

ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শন বা তাদের ক্ষতির কোন তালিকা ও তাদের কোন সহযোগিতা করা হয়নি। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ক্ষতির তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করার। প্রতিটি প্রাকৃতিক দূর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা। কৃষির বিপ্লব ধরে রাখতে দূর্যোগ পরবর্তী সময় যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে তাদের প্রনোদনার আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শহীদুল হক, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সূর্যমুখী, সরিষা, বাদাম, ভুট্টা, খেসারির ডাল সহ ৩৫হাজার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ আমাদের হাতে এসেছে। উপজেলা ভিত্তিক তা হস্তান্তর করা হয়েছে, তালিকা করার পর তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ১বিঘা করে জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে আরও বরাদ্দ আসবে। সময়মত প্রনোদনার টাকা কৃষকদের দেওয়া হবে।