ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিশু হত্যার পাঁচদিন আগেও অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মেরেছিলেন রিমন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২২  

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাবার কোলে গুলি খেয়ে প্রাণ দিতে হলো চার বছরের তাসফিয়াকে। এ ঘটনার মূলতোহা ২৫ বছর বয়সী মো. রিমন পাঁচদিন আগেও এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর তলপেটে লাথি মেরেছিলেন। এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের।

ভুক্তভোগীর বাবা উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ আলম বলেন, কয়েকদিন আগে একই এলাকার মো. বাদশার কাছে আমাদের একটি জমির মাটি বিক্রি করেন আমার ভাই খুরশিদ আলম। মাটি কেটে নেয়ার সময় ছয় ফুট গভীর করে মাটি কাটেন বাদশা। আমি এর প্রতিবাদ করি। এর জের ধরে পাঁচদিন আগে রিমন, মহিনসহ একদল সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে আমার বাড়িতে গুলি করেন ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান বাদশা।

তিনি আরো বলেন, এ সময় আমার চার মেয়ে এগিয়ে আসে। এক মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তার তলপেটে লাথি দেন রিমন। আরেক মেয়ের পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। তখন আমাকেও মারধর করেন। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পর এসআই জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করেন। কিন্তু আমার অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয়নি পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক থাকায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর তলপেটে লাথি মারার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও রিমনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজীপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, রিমনের বাড়ি দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুরে গ্রামে। কিন্তু রিমন সব সময় হাজীপুর ইউনিয়নে আড্ডা দেন। এ ইউনিয়নে রিমন তার সহযোগী মহিন, রহিম, বাদশাসহ ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তারা এলাকায় প্রকাশ্যে গাঁজা ও ইয়াবার ব্যবসা করেন। এলাকাবাসী কারো সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটলে একটি পক্ষ নিয়ে অন্য পক্ষের ওপর চড়াও হওয়া, বাড়িঘরে হামলা করা, জিম্মি করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়াই তাদের কাজ।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ মো. আজিম মির্জা বলেন, পুলিশ ও র‍্যাবকে দুদিন আগেও সন্ত্রাসী রিমনসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করার জন্য অনুরোধ করেছি। তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার অভিযোগে কর্ণপাত করেনি। তাদের নীরবতার কারণেই একটি ফুটফুটে শিশুকে প্রাণ দিতে হলো।

হাজিপুর ইউনিয়ন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে- স্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, এখানে আমরা কেউ নিরাপদ নই। মহিন, রিমন ও তার বাহিনীর সদস্যরা গোটা হাজীপুরকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছে। তাদের কাছে এলাকার মানুষজন জিম্মি। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা-পুলিশকে অনুরোধ করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রিমন ও তার সহযোগীরা সরাসরি দলীয় কোনো পদ-পদবিতে না থাকলেও তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের অনুসারী। এ কারণে এলাকার মানুষজনও তাদের ভয়ে মুখ খুলতে চান না।

রিমন ও তার সহযোগীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল খোরশেদ। তিনি বলেন, রিমনসহ যেসব সন্ত্রাসীর নাম আলোচনায় এসেছে, তারা কেউই আওয়ামী লীগ কিংবা সহযোগী কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। পুরো হাজীপুরের মানুষ তাদের হাতে জিম্মি। তিনি এসব সন্ত্রাসীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, পাঁচদিন আগে ফিরোজ আলমের বাড়িতে ককটেল হামলা ও গুলির বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার কথা সঠিক নয়। রিমনসহ হাজীপুর ও লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। রিমনের বিরুদ্ধে থানায় এর আগেও আটটি মামলা হয়েছে। প্রায় সব মামলাই মারামারির।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মো. আজিম কখনো হাজীপুরের সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও তদন্ত) দীপক জ্যোতি খীসা বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। ১৭ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।