ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

এশিয়ার সেরা ‘স্ট্রিট ফুডের’ তালিকায় বাংলাদেশের ফুচকা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২২  

ফুচকা—এই নামটা শুনলেই তো জিভে জল চলে আসে। কুড়মুড়ে গোলাকৃতির একটা ভেতর মশলাদার ঝাল ঝাল চটপটি আর তার উপর টকমিষ্টি তেঁতুল পানি। আস্ত একটা ফুচকা মুখে পুরে নিয়ে কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে যায়, এর পর মুখে স্বাদের যে ঝড় ওঠে সেটার তুলনা কি অন্যকিছুর সঙ্গে হয়? আমাদের আশেপাশে এমন খুব কম মানুষদেরই খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা ফুচকা খেতে ভালোবাসে না।

বাংলাদেশিদের কাছে অন্যতম প্রিয় মুখরোচক খাবার ফুচকা এশিয়ার মধ্যে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। সিএনএন ট্র্যাভেলে প্রকাশিত জনপ্রিয় কোয়েস্ট’স ওয়ার্ল্ড অব ওয়ান্ডার সিরিজের অংশ হিসেবে এশিয়ার ৫০টি সেরা স্ট্রিট ফুডের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের ফুচকা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন কোয়েস্ট’স ওয়ার্ল্ড অব ওয়ান্ডার সিরিজের অংশ হিসেবে এশিয়ার সেরা ৫০টি স্ট্রিট ফুডের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই খাবার ভারতে পানিপুরি, গোল গাপ্পা ও গুপচুপ নামেও পরিচিত।

সিএনএন বলছে, হালকা মিষ্টি, একটু টক ও ঝাল স্বাদের ফুচকা বাংলাদেশের সর্বজনীন এক স্ট্রিট ফুড। সাধারণত মচমচে ফাঁপা গোলকে আলু আর ছোলার মিশ্রণ ভরাট করে দেওয়া হয়। পেঁয়াজ, শসা, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ এবং চটপটির বিশেষ মসলা এই খাবারে বিশেষ মাত্রা যোগ করে।

পরিবেশনের আগে দোকানি ফুচকার ওপরে সিদ্ধ ডিমের কুচিও ছড়িয়ে দেন। এরপর একটি ছোট কাপে করে তেঁতুলের পানি দেওয়া হয়। একেকটি ফুচকা মুখে পুরে নেয়ার আগে সেই তেঁতুলের পানি মিশিয়ে সাধারণত খাবারটি উপভোগ করেন বাংলাদেশিরা।

 

ফুচকা—এই নামটা শুনলেই তো জিভে জল চলে আসে। ছবি: সংগৃহীত

ফুচকা—এই নামটা শুনলেই তো জিভে জল চলে আসে। ছবি: সংগৃহীত

ফুচকা এলো কীভাবে?

প্রথম দিকে ফুলকি নামে পরিচিত এই খাবার সম্পর্কে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক জার্নাল অব ইন্ডিয়া বিশদ বিবরণ রয়েছে। ওই বিবরণে এ খাবারের উৎপত্তিস্থল হিসেবে অবশ্য বারানসির কথা বলা হয়েছে। জনপ্রিয় খাবার লুচির ক্ষুদ্র সংস্করণকে শক্ত কুড়মুড়ে করে খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল।পরবর্তীকালে মোগলাই খানার সংস্পর্শে এসে এর গাঠনিক আঙ্গিকে পরিবর্তন আনে ভারতীয়রা। সাধারণ শক্ত লুচি পরিণত হয় মসলাদার-রসাল গোলগাপ্পা তথা পানিপুরিতে, যা আমাদের দেশে ফুচকা নামে পরিচিত।

১৯৪৭-এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ অঞ্চলে ফুচকা ততটা জনপ্রিয় হতে পারেনি। এ অঞ্চলের কেউ ফুচকা জাতীয় খাবার খেলে তাদের সরাসরি ‘ঘটি’ কিংবা ‘কেইশো’ নামে উপহাস করা হতো। তবে ভারত-পাকিস্তান আলাদা হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের অনেক অধিবাসী এ দেশে চলে এসে স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন। তাদের সংস্পর্শে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এ পানিপুরি তথা ফুচকা আজ বাংলাদেশিদের রসনা বিলাসের উপলক্ষ হয়ে উঠেছে।

এক খাবারের বহু বাহারি নাম!

ফুচকার আছে নানারকমের ধরন। গোলগাপ্পা, ফুলকি, টিক্কি, পানি কে বাতাসে, ফুচকা,  গুপচুপ, বাতাসি, পাকাডা, পানিপুরি কিংবা পাকোরিসহ নানা নাম।এসবের নামকরণের নজিরগুলো বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।যেমন গোলগাপ্পার নামকরণ গোল একটা ফুচকাকে এক গাপ্পায় অর্থাৎ একেবারে মুখে পুরে নেওয়ার কারণে হয়েছে। আবার পানিপুরি বলা হয় ফুলন্ত মচমচে পুরির ভেতর টক-ঝাল-মিষ্টি পানি দিয়ে খাবার কারণে।ফুচকার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রচলিত নাম হলো পানিপুরি, যার উদ্ভব হয়েছিল দক্ষিণ বিহারের মগধে।

অঞ্চলভেদে নামকরণের ভিন্নতার পাশাপাশি এর পরিবেশনের পদ্ধতিতেও ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। আর মূল পার্থক্যটি লক্ষ করা যায় পুর তৈরিতে। নানা জায়গায় আলুর পুর, সবজির পুর, সালাদের পুর, ঘুঘণির পুর কিংবা কেবল ডাবলি মিশ্রিত টকমিষ্টি জল ব্যবহৃত হয়। কোনও কোনও এলাকায় ঝালের পরিবর্তে মিষ্টিজাতীয় পুর ব্যবহার করা হয়।অনেক ক্ষেত্রে সব ঠিক থাকে, কেবল তেঁতুল জলের পরিবর্তে দেখা যায় ধনিয়া পাতার চাটনি, পুদিনা মিশ্রিত জল, লেবুর জল কিংবা মিষ্টি খেজুর জল।তবে দেশজুড়েই দই-ফুচকা বা টক দইসহযোগে পরিবেশিত ফুচকা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

ফুচকা এক সাম্যবাদী খাবার! কারণ, গরিব থেকে বড়লোক, নারী থেকে পুরুষ, কিশোরী থেকে প্রৌঢ়া—সব ধরনের মানুষই এক সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে ফুচকা খেতে ভালোবাসেন।