ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আফ্রিকার দেশেও যেভাবে সরকারি ভাষা হয়ে ওঠে বাংলা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২২  

আফ্রিকার পশ্চিম অংশের ছোট্ট একটি দেশের নাম সিয়েরা লিওন। এখানে দেখা মিলবে, বহু ভাষা এবং সংস্কৃতির সহাবস্থান। জনসংখ্যা সাড়ে ৭৬ লাখের কাছাকাছি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, সুদূর আফ্রিকার এই দেশে অন্যতম একটি সরকারি ভাষার মর্যাদা পেয়েছে বাংলা।

সিয়েরা লিওনকে বলা হয় ‘হিরের খনির গরিব দেশ’। এখানে খনিজ পদার্থের ভাণ্ডার থাকলেও সাধারণ জনগণ দারিদ্রে কষ্টে দিন কাটান। ১৯৬১ সালে ব্রিটিশ শাসক থেকে স্বাধীন হয় দেশটি। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন স্যার মিলটন মারগাই। কিন্তু ১৯৬৪ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গেলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

সে দেশের ১৬টি উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত। জনগণের মনে জমতে থাকে ক্ষোভ আর অসন্তোষ। কলহ বাড়তে বাড়তে স্বাধীনতার প্রায় তিন দশক পরে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। ১৯৯১-তে কিছু বিদ্রোহী দল চেষ্টা করে রাষ্ট্রপতি জোসেফ মোমাহকে পদচ্যূত করতে। তার থেকেই যুদ্ধের শুরু। রক্তাক্ত হয়ে ওঠে সিয়েরা লিওন। কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ঘরছাড়া হন লাখ লাখ মানুষ।

সিয়েরা লিওন সরকার ব্যর্থ হয়েছিল গৃহযুদ্ধ থামাতে। পশ্চিম আফ্রিকার অন্য দেশগুলো একত্রিত হয়েও কোনো মীমাংসা করতে পারেনি। অবশেষে ১৯৯৯ সালে যুদ্ধ থামানোর দায়িত্ব নেয় রাষ্ট্রসংঘ। তাদের শান্তি মিশনে যোগদান করে অনেক দেশ। বাংলাদেশও অংশ নেয়। রাষ্ট্রসংঘের পাঠানো প্রথম দলে ৭৭৫ জন বাংলাদেশি সেনা ছিলেন। যুদ্ধের অবস্থা খারাপ হতে থাকলে আরো সেনা পাঠানো হতে থাকে।

১২ হাজার বাংলাদেশি সৈন্য পা রাখেন সিয়েরা লিওনের মাটিতে। তারা যেমন বিদ্রোহ থামানোর কাজ করেছেন, স্থানীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হওয়া শুরু করেন। সেখানকার জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। স্থানীয় মানুষেরাও আকৃষ্ট হন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি। এমনি তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠানে বাংলা গানের ব্যবহার শুরু হয়। বিবাদমান উপজাতিগুলোর মধ্যে সম্প্রীতির বোধ জাগিয়ে তোলেন বাংলাদেশি সৈন্যরা। অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনী ততটা আন্তরিকভাবে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে মিশতে পারেননি।

২০০২ সালে শান্তি ফিরে আসে সিয়েরা লিওনে। দেশ পুনর্গঠন এবং বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য বাংলাদেশের কাছে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। বাংলাদেশি সৈন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে বছরের ১২ ডিসেম্বর বাংলা ভাষাকে অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণা করেন সিয়েরা লিওনের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আহমেদ তেজান কাব্বা। তবে এই স্বীকৃতি কেবলই সাম্মানিক। সেদেশে সরকারি কাজকর্ম হয় ইংরেজি এবং ক্রিওল ভাষায়। রাষ্ট্রপতি তেজান কাব্বা ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফর করেন।

বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের একটি দেশ বাংলা ভাষাকে যে মর্যাদা দিয়েছে, তা সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির।