ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

‘ওরা এইখানে কসাইখানা বানাইছিল’

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২১  

‘আমার স্বামী স্বাধীনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার ওইপাশে দ্যাহে (দেখে) এক গর্ত ভরা খালি মাথা আর চুল। ওরা এইখানে কসাইখানা বানাইছিল, আটআনা করে পিস (মানুষের) কাটাইতো। আর লাইন দিয়ে সব গুলি করে এই খালের মধ্যি সব ভাসায়ে দেতো।’ 

বলছিলেন ৬৫ বছর বয়সী অজেদা বেগম। তিনি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল সাত্তার সিকদারের স্ত্রী। গল্লামারী বধ্যভূমি, যেখানে আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত, সেখানে ঘটে যাওয়া নির্মন অত্যাচারের অন্যতম চাক্ষুষ সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল সাত্তার সিকদার।

এখন থেকে প্রায় অর্ধশত বছর আগের কথা, খুলনার ময়ূরী নদীর তীরে একটুকরো জায়গা জুড়ে ছিল এক রেডিও স্টেশন। যা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যা কেন্দ্রে রুপান্তরিত হয়। সেই বধ্যভূমির উপরে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন রেডিও স্টেশনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে শহীদ নজরুল ইসলাম ভবন নামকরণ করা হয়। বর্তমানে ভবনটি পুরাতন প্রশাসনিক ভবন হিসেবেও পরিচিত। এই ভবনটি ছিল তখন ১৮ কক্ষবিশিষ্ট একটি একতলা ভবন এবং অনিকেত প্রান্তরজুড়ে ছিল বিশাল এক রেডিও টাওয়ার। 

অজেদা বেগম বলেন, তার স্বামী যখন তাকে বিয়ে করে আনেন, তখন এই গল্লামারী ছিল এক বিরানভূমি। আজ যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, ঠিক তার সামনে দিয়ে ছিল একটি বড় খাল। সেই খাল দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করত হানাদার বাহিনীর গানবোটগুলো। 

তিনি জানান, যুদ্ধের সময় এই খালে ভেসে ছিল অজস্র লাশ। রেডিও স্টেশনটি ছিল পুরোপুরি একটি নির্যাতন কেন্দ্র। যেখানে দিনের বেলায় অনেক সাধারন মানুষ বন্দী করে আনা হতো। আর রাত হলে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হতো। সংখ্যাটি একসময়ে এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, তখন হানাদার বাহিনী সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করত।

অমল কুমার বাইনের লেখা গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ: খুলনা জেলা শিরোনামের বইতে পাওয়া যায় তৎকালীন বেতার কেন্দ্রের ঘোষক হামিদুর রহমানের এমন একটি উক্তি- ‘তখন বেতার কেন্দ্রে চাকরি করতে হতো মিলিটারি বেষ্টনীর ভেতর দিয়ে। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এনে পুলিশ ব্যারাকে রাখা হতো। তারপর সন্ধ্যা হলে সেই নিরীহ লোকগুলোকে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হতো। কিছুদিন পরে ফায়ারের পরিবর্তে জবাই করা হতো তাঁদের। সেই সময়ে কিছু বাঙালি রাজাকার এই দায়িত্ব নেয়।

যে মাটি শহীদের রক্তে ভেজা ছিল সেই মাটির বুকে এখন হাজারো শিক্ষার্থী আসেন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, বধ্যভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য আমাদের দায়বদ্ধতা বেশি। প্রধানমন্ত্রীর যে গতিশীল নেতৃত্ব এখন চলছে, এই নেতৃত্বের প্রতি অবিচল থেকে আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করে যাচ্ছি এবং যাবো- এটাই আমাদের প্রত্যয় স্বাধীনতার এই সুবর্নজয়ন্তীতে।