ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

উটের গায়ে বাহারি নকশা, ঐতি‌হ্যকে স‌ঙ্গে নিয়ে বাড়া‌চ্ছে আকর্ষণ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০২১  

ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ কোরবানির পশু। আমাদের দেশসহ সারাবিশ্বে জমে উঠেছে পশুর হাট। পশুর হাট কিংবা কোরবানি কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে নানা রকম কাজ আর উপার্জনের পন্থা। পাকিস্তানের পশুর হাটগুলো নজর কাড়ছে শরীরে বাহারি নকশা আঁকা উট। সেখানে কোরবানির জন্য উটের কদর সবচেয়ে বেশি। আর ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতেই এভাবে সাজানো হয় উটগুলোকে।  

আমাদের দেশে গরু, ছাগল, ভেড়া কোরবানির জন্য বেশি দেখা যায়। তবে কিছু বছর ধরে কোরবানির হাটে নজর কাড়ছে উট। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানে আছে উটের বহুল ব‍্যবহার। মালবোঝাই, যাত্রী বোঝাই ছাড়াও আরো একটি বিস্ময়কর কাজে ব‍্যবহার করা হয় এই উটগুলোকে। আর তা হলো শিল্পচর্চা! 

 

একেকটি নকশা করতে সময় লাকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা

একেকটি নকশা করতে সময় লাকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা

কোরবানির জন্য উটের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাহারি নকশা। এই শিল্পের নাম ক্যামেল হেয়ারকাট আর্ট। উটের লোম ছাটাই করে সুন্দর সুন্দর নকশা করার  ব‍্যাপক প্রচলন দেখা যায় ভারত এবং পাকিস্তানে। কোরবানি ঈদে পশুর দাম বেশি পাওয়া যাবে এজন্য সিন্ধু প্রদেশ থেকে নকশাকারদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। এক একটা উটের গায়ে নকশা করতে উটের আকার এবং নকশাভেদে গড়ে ২ থেকে ৮ ঘন্টা লাগে। এবং নরসুন্দরেরা উট মালিকের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন থিমের নকশা কেটে যান উটের লোমে। নকশা তৈরির পূর্বপরিকল্পনায় ব‍্যবহৃত হয় দড়ি। দড়ির সাহায্যে উটের শরীরে কিছু মাপ এঁকে নেয়া হয় যাতে করে দুইদিকেই একই রকম নকশা তৈরি হয়। আর সূক্ষ্ম নকশা তৈরিতে আঙ্গুলের মাপ ব‍্যবহার করা হয় । আর এই গোটা নকশা তৈরিতে কমবেশি দুই থেকে তিন হাজার  রূপী পারিশ্রমিক নেন তারা।

উটের গায়ের পশম দিয়ে করা নানা নকশায় ফুটে উঠেছে।  তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় , এই অকল্পনীয় সুন্দর নকশাগুলো তৈরি করতে তারা ব‍্যবহার করেন শুধুমাত্র একজোড়া ধারালো কেচি। ফুল, লতাপাতাসহ নানান জ্যামিতিক নকশা আকর্ষণীয় রূপ দিচ্ছে উটের। এখানে সবচেয়ে বেশি ফুলের নকশার চাহিদা বেশি। ক্রেতারাও এটি বেশি পছন্দ করেন। তবে গোল আর আঁকাবাঁকা নকশাগুলো করা সবচেয়ে কঠিন। একেকটি উটের শরীরে নকশা করতে একজন নকশাকারের সময় লাগে ৫ ঘণ্টার বেশি। 

 

কোরবানির সময় পাকিস্তানের হাটগুলোতে এভাবে উটের গায়ে নকশা করতে দেখা যায়

কোরবানির সময় পাকিস্তানের হাটগুলোতে এভাবে উটের গায়ে নকশা করতে দেখা যায়

সেখানকার গ্রাহক এবং মালিকদের মতে, বাজারে অন্যান্য উটের চেয়ে নকশা করা উটের চাহিদা অনেক বেশি। দামও ভালো পাওয়া যায়। একেকটি উটের নকশা করাতে মালিকদের গুণতে হয় ৫ থেকে ১০ হাজার রুপি। তবুও আগ্রহের কমতি নবেই মালিকদের। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে হলেও এই কাজ করাতে চান অনেক উট মালিক। 

৫০ বছর বয়সী নকশাকার বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই এই কাজ করছেন। বাবার কাছ থেকে হাতেখড়ি। তারপর থেকেই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। 

বলে রাখা ভালো , এই নকশা তৈরির প্রক্রিয়ায় উটের প্রতি কোনো অমানবিক আচরণ করা হয় না। বরং নকশা করা উটগুলোকে একটু যত্নেই রাখা হয়। ভারী মালবোঝাই বা যাত্রী বোঝাইয়ের হাত থেকে সাধারণত পরিত্রাণ পায় এই উটগুলো। আর উটের মালিকও সাধারণ উটের তুলনায় বেশি লাভ করেন এই নকশাদার উট বিক্রি করে।

 

উটের মালিকও সাধারণ উটের তুলনায় বেশি লাভ করেন এই নকশাদার উট বিক্রি করে

উটের মালিকও সাধারণ উটের তুলনায় বেশি লাভ করেন এই নকশাদার উট বিক্রি করে

বিশেষ করে ভারতের রাজস্থানে এবং পাকিস্তানে সিন্ধু ও পাঞ্জাব প্রদেশে এই চল বেশি। উটের লোমছাটাই করে নকশা করার  চলে রমরমা আয়োজন। হয় প্রতিযোগিতাও। রাজস্থানে প্রতি বছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে বা জানুয়ারিতে আয়োজিত হয় এই প্রতিযোগিতা। আর পাকিস্তানে কোরবানির ঈদের আগে। পৃথিবীর বহু পর্যটক ভীড় জমান সামনাসামনি এই বিস্ময়কর শিল্পকর্মের সাক্ষী হতে। 

উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়। আর রাজেস্থানের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে এখনো চলাচল ও বোঝা টানার জন্য উট ব্যবহার করা হয়। রাজেস্থানে তার থেকেও বেশি উট যে কাজে ব্যবহার করা হয় তা হচ্ছে ট্যুরিস্টদের ভ্রমণের জন্য। ট্যুরিস্টরা উটের পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ান।