ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

যে কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত সাজ্জাদ-সেলিমা খসরু-সালাম

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২১  

কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং- বি পাড়া) আসনের সাংসদ এড. আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর শুণ্য হওয়া এই আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেতে মাঠে ছিলেন প্রায় অর্ধ শতাধিক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ি। মনোনয়নপত্রও কিনেছিলেন ৩৫ জন। বেশ আলোচনায় ছিলেন সাজ্জাদ হোসেন, সেলিমা সোবহান, সালাম বেগ, এহতেশামুল হাসান ভূইয়া রুমিরা। কিন্তু সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান করে নৌকার মাঝি হলেন বুড়িচং উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এড. আবুল হাশেম খান । ফলে হতাশ হতে হলো সাজ্জাদ হোসেন, সেলিমা সোবহান খসরু, সালাম বেগ, রুমিদের মত হেভিওয়েট প্রার্থীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিভিন্ন স্থানীয় সূত্র থেকে পাওয়া তত্ত্বের ভিত্তিতে হাশেম খানের নৌকার টিকেট পাওয়া এবং অন্যান্য প্রার্থীদের মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণগুলো বিশ্লেষণ করা হল।

যে কারণে নৌকার মাঝি হলেন অ্যাড. আবুল হাশেম খান:
সক্রিয় রাজনীতিবিদ এড. আবুল হাশেম খান বুড়িচং উপজেলার আ’লীগের সভাপতি। জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতিও ছিলেন। ১৯৬৯ সাল থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। প্রয়াত সাংসদ আব্দুল মতিন খসরুর অন্যতম সহচর ছিলেন। সাংগাঠনিক দক্ষতাও প্রখর। দলের সাথে কখনো বিদ্রোহ করেন নি। বুড়িচং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতিক পেয়েও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু দলের প্রতি আত্মত্যাগ ও আস্থা রাখার পুরস্কারস্বরূপ নৌকার টিেিকট পেয়েছেন হাশেম খান। এমনই ধারণা তৃণমূল রাজনীতিবিদদের।

যে কারণে মনোনয়ন পেলেন না হেভিওয়েটরা:
হেভিওয়েট প্রার্থী সেলিনা সোবহান খসরু প্রয়াত আব্দুল মতিন খসরুর স্ত্রী । সবাই ভেবেছিলেন প্রয়াত মতিন খসরুর স্ত্রী হিসেবে সহানুভূতি পাবেন তিনি। কিন্তু তা আর হয়নি। তার মনোনয়ন না পাওয়ার পিছনে কিছু কারণ হলো- প্রয়াত মতিন খসরু যখন সেলিনা সোবহান খসরুকে বিয়ে করে তখন আপত্তি তুলেছিলেন তার ছেলে ও মেয়ে। প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের সাথে তার সম্পর্ক ভাল ছিল না বলে জানা যায়। এছাড়া প্রয়াত মতিন খসরুর ভাই আবদুল মমিন ফেরদৌসও তার বিরুদ্ধে ছিলেন। এলাকায় দলীয় কোন পদ ছিল না। ছিল না জনসম্পৃক্ততা। তাই হয়তো নৌকার টিকিট পাননি প্রয়াত সাংসদের স্ত্রী।

সাজ্জাদ হোসেন:
আশির দশকে রাজনীতির শুরু করা সাজ্জাদ হোসেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান । তিনিও আলোচিত প্রার্থী ছিলেন। ব্যাপক জনসমর্থন ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বিবেচনায় তিনি বেশ এগিয়ে ছিলেন। দিন শেষে নৌকার টিকিট তিনি পান নি। নৌকার টিকিট না পাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণগুলো হতে পারে- বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তুমুল লড়াই শেষে অল্প কিছু ভোটের জন্য পরাজিত হয়েছিলেন। নির্বাচনে পরাজয়ের পিছনে প্রয়াত সাংসদ আব্দুল মতিন খসরুর হাত ছিল অপবাদ দিয়ে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মতিন খসরুর বিরোধীতা করেছিলেন তিনি। এমন তথ্য স্থানীয় রাজনীতিবিদদের। যদিও বিরোধ কখনো প্রকাশ্যে করেননি। তবে একটা মনোমালিন্য ছিল , এটা প্রায়জনই বলতো।  উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি একবার পরাজিত হয়েছিলেন। এছাড়া বুড়িচং উপজেলা আ’লীগের একাধিক কমিটি ছিল। সাজ্জাদের সাথে কোন্দল ছিল অন্যদের। তাই হয়তো দলীয় কোন্দল এড়াতেই  মনোনয়ন দেয়া হয়নি সাজ্জাদকে।

আব্দুস সালাম বেগ :
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে তিনি বেশ আশাবাদি ছিলেন। গত সাংসদ নির্বাচন থেকে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু তিনি মনোনয়ন পেলেন না। এলাকায় জনসমর্থন কম থাকার বিষয়টি হয়তো নেতিবাচক হয়েছে তার জন্য।

এড. আবদুল মমিন ফেরদৌস:
প্রয়াত সাংসদ আব্দুল মতিন খসরুর আপন ভাই। কুমিল্লা জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অতীতে রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকাই হয়তো মনোনয়ন না পাওয়ার কারণ।

মেজর জেনারেল (অবঃ) মোস্তাফিজুর রহমান:
ঔষধ প্রশাসনের সাবেক ডিজি ছিলেন। এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকা, দলীয় পদ-পদবি ছিল না। মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে এগুলোই হয়তো মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।

জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী :
ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি । তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানও। দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও পরপর দুইবার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার টিকেট পেয়েও বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। সম্প্রতি বি পাড়া উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে সাংবাদিকদের উপর হামলা নির্যাতন করে বেশ সমালোচিত হয়েছেন। এই নেতিবাচক দিকগুলো মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে কাজ করেছে বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন।

ফারুক মেহেদী:
বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের আলোচিত সাংবাদিক। বুড়িচংয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় অবদান রাখা ফারুক মেহেদী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। তবে তিনি কোন প্রচারণায় ছিলেন না। বুড়িচংয়ের রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকায় মনোনয়ন পান নি। তবে তিনি ভবিষ্যতে একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আর্বিভূত হবেন বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন।

অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ:
‘সোনার বাংলা’ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ । বুড়িচং উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। তার মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে কিছু বিষয় কাজ করেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল- ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তৃতীয় হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভের নিজের ভোটকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শিমাইল খাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী পরাজিত হয়।

এহতেশামুল হাসান ভূইয়া (রুমি) :
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহ সম্পাদক তরুণ এই রাজনীতিবিদ বিগত কয়েক মাসে এলাকায় ব্যাপক শোডাউন করেছে। করোনাকালিন সময়ে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার ও নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে বেশ আশাবাদি থাকলেও নিরাশ হয়েছেন। তার মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন- বয়স কম হওয়া কিংবা পূর্বে এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকার বিষয়টি হয়তো প্রাধান্য পেয়েছে।