ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশ থেকে শেখা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

চলতি বছর বড় রকমের বন্যার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশ ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। মূলত ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেই এ বন্যার সৃষ্টি। তবে বাংলাদেশ-ভারত থেকে বন্যায় বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তান সরকারের দেয়া তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে বারো শতাধিক মানুষ। বাস্তুহারা হয়েছে প্রায় ৫ লাখ। দেশের এক-তৃতীয়াংশ এখনও পানির নিচে।
 

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইকোনমিস্টের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, বন্যা মোকাবিলায় পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নেয়া। কেবল মানবিক সাহায্য দিয়ে বন্যা মোকাবিলা করা যায় না। এর জন্য দরকার আগে-পরে বেশ কিছু সতর্ক পদক্ষেপ। বন্যা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন কাঠামোগত উন্নয়ন, প্রতিরোধমূলক প্রস্তুতি ও বন্যা চলাকালে বহুমুখী আর্থিক সংস্থান। বন্যা প্রতিরোধে বাংলাদেশের এ তিনটি ব্যবস্থাই রয়েছে।
 

বহু বছর ধরে বাংলাদেশ বন্যা মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করে আসছে। বিশেষ করে উপকূলীয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় কীভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করতে হবে, কোথায় কতটি আশ্রয়কেন্দ্র থাকবে, আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও আগ্রহ তৈরি করা, নারী-শিশুদের জন্য বন্যাকালীন আলাদা সুবিধা দেয়া, গবাদি পশুর জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে আলাদা ব্যবস্থা রাখা থেকে শুরু করে অন্যান্য কার্যকরী পদক্ষেপে বাংলাদেশে বড় রকমের বন্যা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই প্রশমন করা গেছে।
 

বন্যা চলাকালীন নেয়া পদক্ষেপ ছাড়াও বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো গবেষণার মাধ্যমে বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে। এতে বন্যা হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়া যায়। সরকারের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের মোবাইলে মেসেজ করে বন্যার খবর জানিয়ে দেয়া হয়, এলাকার মসজিদগুলোতে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়, স্বেচ্ছাসেবকদের বড় একটি দল শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে কাজ করে। বন্যার সময় খাদ্য, অর্থ, মোবাইল রিচার্জ দিয়ে বন্যার্তদের সাহায্য করে থাকে সরকার ও অন্যান্য সংস্থা। যথেষ্ট পরিমাণে পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় বড় রকমের বন্যা হলেও জানমালের ক্ষতি অনেকটাই কমে যায়। বিশেষ করে মৃত্যুর হার কমে আসে অনেকটাই।

ইকোনমিস্টের বিশ্লেষণে বলা হয়, ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ যখন পূর্ব পাকিস্তান নামে পাকিস্তানেরই একটি অংশ, সে বছর ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। স্বাধীনতার এত বছর পর ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সে মৃত্যুর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩০ জনে। বাংলাদেশ তার পুরোনো ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের থেকে পাকিস্তান ও আফ্রিকার দেশগুলোর শেখা উচিত–কীভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়।
 

এ বছর পাকিস্তানের বন্যা দেখে মনে হচ্ছে, ২০১০ সালে যখন প্রায় একই ধাঁচের বন্যায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল, সেখান থেকে পাকিস্তান কিছুই শিখতে পারেনি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদাসীন থাকা পাকিস্তানের বিপর্যয়ের প্রধান কারণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। ইকোনমিস্টের মতে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা, একের  পর এক ক্ষমতার অস্বাভাবিক পালাবদলের কারণে দেশটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে পারেনি, যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে এখন।
 

পাকিস্তানের দুর্দশা বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক দিকগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। ইকোনমিস্টের বিশ্লেষণে বলা হয়, এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে একের পর এক দুর্যোগ আসতে থাকলে দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনার মতো দুর্যোগ কাটিয়ে উঠলেও ভবিষ্যতে সারা বিশ্বের জন্য বড় রকমের জলবায়ুকেন্দ্রিক দুর্যোগ অপেক্ষা করছে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।