ব্রেকিং:
১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করবে সরকার সংকট উত্তরণের বাজেট বিমানে মন্ত্রী-সচিবদের প্রথম শ্রেণিতে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত পিপিপি’র পাইপলাইনে নতুন ১৩ মেগা প্রকল্প সরকারের পদক্ষেপে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ হয়েছে প্যানেল স্পিকার হলেন কুমিল্লার প্রাণ গোপাল দত্ত ও আঞ্জুম সুলতানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আরও বিনিয়োগ করুন সরকারের ঋণ কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার, ৩০ জেলে আটক চাটখিলে সরকারি সহায়তা পেল ৭১ পরিবার সুবর্ণচরে বিস্ফোরক মামলায় যুবদল নেতা কারাগারে হাতিয়ায় ৯ মণ সামুদ্রিক মাছসহ ৩০ জেলে আটক রান্না করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো গৃহবধূর ফেনসিডিল মামলায় যুবকের ৮ বছরের কারাদণ্ড ল্যাব ফাউন্ডেশন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা শাখার কমিটি নাঙ্গলকোটে সুইপারের লাশ উদ্ধার কুবিতে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিমানে জঙ্গলে ১৭ বছর মুক্তিযুদ্ধে ভিপি শাহআলমের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে
  • শুক্রবার ০২ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৮ ১৪৩০

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৪

কোটি টাকার অফিস, রিসোর্টে পার্টি দিয়ে অভিনব প্রতারণা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০২২  

কথিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল-তাকদীর প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে গুলশানে খোলে অফিস। হাজার কোটি টাকার ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) দেখিয়ে পণ্য সরবরাহকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই ছিল প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য।

সাপ্লাইয়াররা চুক্তির জন্য অফিসে গেলে গুলশানের নামি দামি রেস্টুরেন্ট থেকে ১০০-এর ওপর খাবারের আইটেম এনে তাদের আপ্যায়ন করতেন আলমগীর। এভাবে সাপ্লায়ারদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে প্রজেক্টে অর্ডার দিতেন বালির। সবশেষ সিরাজগঞ্জ-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে ব্রিজ প্রজেক্টের ৩০০ কোটি সিএফটি বালি সাপ্লাইয়ের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন বলে প্রচারণা চালান আলমগীর। এই বালি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে ভুয়া চুক্তি করেন।

চুক্তি অনুযায়ী কমিশন হিসেবে সাপ্লাইয়ার কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে ৩৫-৪০ কোটি টাকা নিয়ে নেয় তারা। পরে এই টাকা আত্মসাৎ করে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যান মূলহোতা আলমগীরসহ বাকিরা।


 

থিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল-তাকদীরের আটক তিন কর্মকর্তা

থিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল-তাকদীরের আটক তিন কর্মকর্তা

গত ৮ মার্চ রাজধানীর গুলশান থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা হয়। মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে বুধবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও ও গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলমগীরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

গ্রেফতার অন্যরা হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম (৪৬), মো. ইমরান হোসাইন (৪৪)। এসময় তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের কপি, সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে স্ট্যাম্প চুক্তিপত্রের কপি ও একটি ১০ কোটি টাকা বিয়ের কাবিনের ফটোকপি পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আলমগীর হোসাইন গুলশানে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে একটি অফিসে নেন। সেখানে ‘আল তাকদীর ইন্টারন্যাশনাল’ নামে খোলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান খুলে আট হাজার কোটি টাকার ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন বলে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।

আলমগীর নিজস্ব অনলাইন টিভিতে (তাকদীর টিভি) এই প্রচারণা চালান। এসব প্রচারণা দেখে প্রলুব্ধ হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ৩০০ আগ্রহী সাপ্লাইয়ার তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ১ সিএফটি বালিতে ১০ টাকা লাভ হবে বলে সাপ্লাইয়ারদের জানান আলমগীর। এভাবে সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে ভুয়া চুক্তি করে কমিশন হিসেবে তাদের কাছ থেকে ৩৫-৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন আরও বলেন, আলমগীর হোসাইন নিজেকে অনেক বড় মাপের কন্ট্রাক্টর প্রমাণের জন্য গুলশান-১ এ অফিস নিয়ে কোটি টাকা খরচ করে ডেকোরেশন করেন। বড় সাপ্লাইয়ারদের নিয়ে বিভিন্ন রিসোর্টে কয়েকবার বড় ধরনের পার্টিও করেছেন।

এখানেই শেষ নয়, সাপ্লাইয়ারদের আরও বিশ্বাস জন্মাতে নেন আরকে প্রতারণার আশ্রয়। যমুনা সেতুর প্রজেক্ট এলাকায় সাপ্লাইয়ারদের নিয়ে ‘প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে ব্রিজের বালি সরবরাহের নিজস্ব ডাম্পিং পয়েন্টের শুভ উদ্বোধন’ লেখা ব্যানার নিয়ে কাজ উদ্বোধন করেন আলমগীর, যা ছিল একটি ভুয়া অনুষ্ঠান। এরপর এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন।

গ্রেফতার আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সিআইডিকে জানান, এ প্রতারণার কাজে লেনদেনের সূত্রে একটি বেসরকারি ব্যাংকের নারী কর্মকর্তা সালমা সুলতানা সুইটির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে গড়ে ওঠে সখ্য। ওই নারী ব্যাংক কর্মকর্তা নিজে গ্রান্টার হয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে দুই হাজার কোটি টাকার এলসি, এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ক্যাশ করে দেবে বলে আলমগীরকে আশ্বস্ত করেন।

এমন আশ্বাস পেয়ে আলমগীর তার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সালমা সুলতানা সুইটিকে তার দাবি অনুযায়ী ১০ কোটি টাকার কাবিন দিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর গুলশানের একটি বাসায় মাসিক দুই লাখ টাকা ভাড়া করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকা শুরু করেন।

এদিকে আত্মসাৎ করা টাকা দিয়ে কোটি টাকার গহনা ও নগদ টাকাসহ প্রায় চার কোটি টাকা দ্বিতীয় স্ত্রীকে দেন। পরে এলসি না হওয়ায় আলমগীর ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। একপর্যায়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে আলমগীর তালাক দিলে ১০ কোটি টাকা দেনমোহর আদায়ের জন্য তার দ্বিতীয় স্ত্রী আদালতে মামলা করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর আরো জানান, এর আগেও বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার ও প্রতারণার অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে।