ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

একাত্তরে পা`কিস্থানি`দের দো`সর ছিলেন ফটোগ্রাফার শহীদুলের মা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২২  

দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ও ফটো সাংবাদিক হিসেবে আলোচিত শহীদুল আলমের আসল পরিচয় কী? তিনি কি সাংবাদিক? তার সম্পর্কে খোঁজ নিলে জানা যায়, তিনি কখনই সাংবাদিক ছিলেন না। তিনি মূলত একজন ফটোগ্রাফার মাত্র।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় দেখা যায়, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় নানান উস্কানিমূলক পোষ্ট করেন।

এ ছাড়াও বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রপাগান্ডা চালান নিজের ফেসবুক ও টুইটার আইডি থেকে। বিদেশি রাষ্ট্রদূত বা বিভিন্ন সংস্থার পেজে গিয়েও তিনি একইভাবে দেশবিরোধী মন্তব্য করেন।

তিনি এইসব কাজ করেছেন কেবল কি তার নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে তার?

ইতিপূর্বে তার এসব পোষ্ট এবং গ্রেপ্তার নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার গ্রেপ্তার ইস্যুতে তখন অনেকেই সরকারের সমালোচনা শুরু করেন। যদিও সমালোচকরা সবাই শহীদুলের মত সরকারবিরোধী বিভিন্ন ফোরামে জড়িত।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোটা আন্দোলনের সাথে যেমন অপশক্তি এবং স্বাধীনতাবিরোধীরা যুক্ত ছিল, তেমনি দেখা যায় শহীদুল আলমের মা কাজী আনোয়ারা মনসুর ছিলেন ১৯৭১ সালে পাকিস্থানি বাহিনীর দোসর। কুখ্যাত রাজাকার সবুর খান ছিলেন আনোয়ারা মনসুরের ভাই অর্থাৎ শহীদুলের মামা এই রাজাকার। অতএব, পারিবারিক সূত্রেই তিনি দেশবিরোধী, এটা স্পষ্ট করে বলা যায়।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ মুক্তিবাহিনীর ২নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং 'কে-ফোর্স'- এর অধিনায়ক ছিলেন। তার ২ মেয়েকে পাকিস্থানি বাহিনীর কথায় নিজ বাসায় আটকে রাখেন পাকিস্থানি দোসর শহীদুল আলমের মা কাজী আনোয়ারা মনসুর। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের উদ্ধার করে আনতে গেলে তিনি বাধা দেন, তার বাসা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিতে পাকিস্থানি বাহিনীকে ফোন করার চেষ্টা হয় এবং সেখানে ফায়ারিং হয়।

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের লেখা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের ডায়েরি- "একাত্তরের দিনগুলো" বই থেকে ৩১ অক্টোবর ১৯৭১ এর একটি ঘটনার বিবরণ আমরা জানি এ রকম-

"এপ্রিলের মাঝামাঝি বাদল খালেদ মোশাররফের স্ত্রী রুবী এবং তার মাকে ঢাকা থেকে নিয়ে খালেদের কাছে পৌঁছে দেয় অনেক কষ্ট করে। যাবার সময় পথে ঘোড়াশালে ও ভৈরববাজারে পাক বিমানবাহিনীর বম্বিংয়ের মধ্যে পড়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে দৌড়ে, পালিয়ে একদিন রুবী পৌছে যায় খালেদের কাছে। কিন্তু মেয়ে দু’টি রয়ে যায় ঢাকায়।

রুবীর ভাই দীপুর বন্ধু মাহমুদের বাসায় ছিল মেয়েরা। পাকি আর্মি দীপু ও মেয়ে দু’টিকে ধরে ফেলে। তারপর সামরিক কর্তৃপক্ষ অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয়ের হেডমিস্ট্রেস মিসেস আনোয়ারা মনসুরের হেফাজতে রেখে দেয় খালেদ মোশাররফের মেয়ে দু’টিকে।

মেজর খালেদ মোশাররফের স্ত্রীকে ঢাকা থেকে পার করে দেবার অপরাধে সামরিক সরকার হুলিয়া বের করে বাদলের নামে। তবুও বাদল কিছুদিন পর আবার ঢাকা আসে। এবার তার কাজ খালেদের মেয়ে দু’টিকে নিয়ে বাবা-মা’র কাছে পৌছে দেয়া। খুব কঠিন কাজ। আনোয়ারা মনসুরের বাসা হলো এলিফ্যান্ট রোডের ‘নাশেমন’ সরকারি ভবনে, ৩ তলার ফ্ল্যাটে। সেখান থেকে দু’টি বাচ্চা সরিয়ে আনা বড় সহজ কাজ নয়।

বাদলের এ কাজে তার সঙ্গী হলো বদি, কাজী, স্বপন ও চুল্লু। চুল্লু নিচে গাড়িতে বসে রইল স্টার্ট দিয়ে। বাকি ৪ জন ৩ তলায় উঠে গেল। কিন্তু দু’টি মেয়েকেই নিয়ে আসতে পারল না ওরা। আনোয়ারা মনসুরের বাধার এক পর্যায়ে বাড়ির একজনকে টেলিফোনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে স্বপন ব্ল্যাংক ফায়ার করে।

আনোয়ারা মনসুরের মাথায় স্টেনের বাড়ি লাগে। বড় মেয়ে বেবী বাদলকে চিনত, কিন্তু ছোটটি চিনত না। মিসেস মনসুর ছোট মেয়ে রুপনকে আঁকড়ে ধরে বসেছিলেন। এরপর বাদলরা ওখানে আর বেশিক্ষণ থাকা নিরাপদ মনে করেনি।

বাদল বেবীকে তুলে নিয়ে সঙ্গীদের সঙ্গে নিচে নেমে আসে। দেখে, গাড়ির কাছাকাছি লোক জমে যাচ্ছে। ওরা দ্রুত গাড়িতে উঠে উধাও হয়ে যায়। শহরে আর কোথাও দাঁড়ায়নি। গোপীবাগে গিয়ে এক জায়গায় চুল্লু ওদের নামিয়ে দেয়। বাদল আর কাজী বেবীকে নিয়ে মানিকনগর দিয়ে গিয়ে দাউদকান্দি হয়ে পথে অনেক বিপত্তি পেরিয়ে তারপর খালেদ মোশাররফের ক্যাম্পে পৌছায়।"

স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করতে ভোলেননি শহীদুল। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশি বিদেশি ফটোগ্রাফারদের তোলা দুর্লভ সব ছবি বাংলাদেশি হিসেবে আর্কাইভ করার নামে কখনও ফ্রিতে, কখনও স্বল্পমূল্যে কিনে, রয়্যালটি ফ্রি ছবি সংগ্রহ করে নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেন। এরপর সেসব ছবি নিজের এবং প্রতিষ্ঠানের নামে কপিরাইট করান।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ নিবন্ধ, গবেষণামূলক কার্যক্রমের জন্য যখন গবেষকদের ছবির প্রয়োজন হয়, সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখেন সেসব ছবি নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কপিরাইট করা। অর্থাৎ বিনামূল্যে ব্যবহার করলে আইনত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

আর সেসব ছবি অলাভজনক বা বাণিজ্যিক কোনো কাজে ব্যবহার করতে হলে শহীদুল আলমকে দিতে হবে ছবিপ্রতি ৫০০ ডলার করে প্রতিবার। দ্বিতীয়বার ব্যবাহর করতে চাইলে আবারও দিতে হবে ৫০০ ডলার!

ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা এবং প্রকাশনায় ভাটা পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে অথেন্টিক তথ্য উপাত্ত নিয়ে যত দলিল, গবেষণামূলক লেখা এ জাতি পেতে পারত, ততটা হয়নি শুধুমাত্র এই মাফিয়ার জন্য। এ কারণে তাকে অনেকেই ফটোমাফিয়া বলে ডাকেন।